Source : BBC NEWS

জো বাইডেন

ছবির উৎস, Getty Images

২৩ মিনিট আগে

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত বলে তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। ক্যান্সার তার শরীরের হাড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

শুক্রবার ৮২ বছর বয়স্ক মি. বাইডেনের শরীরে এই রোগ শনাক্ত হয়। তিনি প্রস্রাব জনিত সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন।

চিকিৎসক জানিয়েছেন তার ক্যান্সার কিছুটা আগ্রাসী ধরনের এবং গ্লিসন মাত্রা দশের মধ্যে নয়। এর মানে হলো এটি একটি উচ্চ ধাপের ক্যান্সার, যা শরীরে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

মি. বাইডেন ও তার পরিবার চিকিৎসার সম্ভাব্য উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার কার্যালয় বলছে, যে ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছে তা কিছুটা হরমোন সংবেদনশীল হওয়ায় এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

ক্যান্সারের খবর প্রকাশের পর সাবেক প্রেসিডেন্টকে সমর্থন করে অনেকে বিবৃতি দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন যে, তিনি এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এই খবর শুনে দু:খ পেয়েছেন।

“আমরা জিল ও পরিবারের প্রতি আন্তরিক শুভকামনা জানাচ্ছি। আমরা দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি,” লিখেছেন তিনি।

সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, তিনি ও তার স্বামী বাইডেন পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছেন।

বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
ত্বকের পরে পুরুষরা  প্রোস্টেট ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হন

সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ক্যান্সারের জন্য চিকিৎসা খুঁজে পেতে বাইডেনের চেয়ে বেশি কেউ কিছু করেননি। তিনি ও তার স্ত্রী মিশেল ওবামা মি. বাইডেনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।

জো বাইডেন ২০১৬ সালে ‘ক্যান্সার মুনশট’ কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন এবং তিনি নিজেই এর নেতৃত্বে থাকবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।

স্বাস্থ্য ও বয়স নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হবার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে ২০২৪ সালে নিজেকে সরিয়ে নেয়ার এক বছর পর এ ধরনের একটি খবর এলো। তিনিই সবচেয়ে বেশি বয়সে দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন।

একটি টেলিভিশন বিতর্কে দুর্বল পারফরম্যান্সের কারণে সমালোচিত হবার পর সমালোচনা জোরদার হলে এক পর্যায়ে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।

এক পর্যায়ে তার জায়গায় কমালা হ্যারিস ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেন।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য মতে, বিশ্বব্যাপী পুরুষদের ক্ষেত্রে ত্বকের ক্যান্সারের পর প্রোস্টেট ক্যান্সারেই বেশি মানুষকে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।

বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত করা হয়।

ছবির উৎস, Getty Images

দ্যা ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বা সিডিসি বলছে, প্রতি ১০০ জন পুরুষের মধ্যে ১৩ জনই জীবনের একটা পর্যায়ে প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তাদের মতে বয়সের সাথে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ উইলিয়াম ডাহুট বিবিসিকে বাইডেনের ডায়াগনোসিসের যেসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তার ভিত্তিতে বলেছেন, এই ক্যান্সারটির চরিত্রই অনেকটা আগ্রাসী।

“সাধারণত ক্যান্সার হাড়ে ছড়িয়ে পড়লে সেটাকে আমরা নিরাময়যোগ্য ক্যান্সার মনে করি না,” বলেছেন তিনি।

তিনি অবশ্য বলেছেন প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসায় অনেক রোগীর মধ্যেই ভালো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। “এবং অনেকে চিকিৎসা নিয়ে অনেক বছর বাঁচতে পারেন,” বলেছেন তিনি।

বাইডেন হোয়াইট হাউজ ছাড়ার পর জনসম্মুখে এসেছেন কমই। তিনি গত এপ্রিলে শিকাগোতে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আয়োজিত একটি সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

মে মাসে বিবিসিকে একটি সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন তিনি, যেখানে তিনি বলেছিলেন যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিলো তার জন্য কঠিন।

এতে স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ‘এর সমর্থনে কোনো ধরনের প্রমাণ নেই’।

বহু বছর ধরেই জো বাইডেন ক্যানসার গবেষণার পক্ষে প্রচার চালিয়ে আসছেন। ২০২২ সালে তিনি ও তাঁর স্ত্রী জিল বাইডেন ‘ক্যানসার মুনশট’ উদ্যোগ পুনরায় শুরু করেন, যার মূল লক্ষ্য ছিলো ২০৪৭ সালের মধ্যে ৪০ লাখের বেশি ক্যানসারের মৃত্যু প্রতিরোধে গবেষণার গতি বাড়ানো।

বাইডেনের বড় ছেলে বাউ বাইডেন ২০১৫ সালে মস্তিষ্কের ক্যানসারে মারা গিয়েছিলেন।