Source : BBC NEWS

কাশিমপুর কারাগার

বাংলাদেশে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকারের গত আট মাসে বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত বিশেষ ক্ষমতা আইনের আটকাদেশে অন্তত ৩৭ জন কারাবন্দি রয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ বছর ১৮ই এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচজনকে ওই আইনে আটকাদেশ দেয়ার বিষয়টি দায়িত্বশীল সূত্র থেকে নিশ্চিত হয়েছে বিবিসি বাংলা।

তবে আটকের ক্ষেত্রে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনটির অপপ্রয়োগ এবং এর মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার ও কারাবাস দেয়ার ঘটনায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের প্রয়োগ নিয়ে বিতর্কের বিষয়টি আবার সামনে আসে। গত আট মাসে বিশেষ ক্ষমতা আইনে কারাবন্দি ৩৭ জনের মধ্যে মেঘনা আলমসহ চারজন নারী রয়েছেন।

বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকাদেশের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনেকের বিরুদ্ধেই বিতর্কিত আইনটি ব্যবহার করেছে।

সবশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’র মোটিফ পোড়ানোর ঘটনায় শাহবাগ থানায় যে মামলা হয়েছে সেখানেও বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারায় মামলা হয়েছে।

এই আইনের মাধ্যমে আটকাদেশের অনেক ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় বলেও সমালোচনা রয়েছে। মানবাধিকার আইনজীবী এবং সংগঠনগুলো বিশেষ ক্ষমতা আইনের ব্যবহার নিয়ে বরাবরই উদ্বেগ জানিয়ে এসেছে।

এ বছর ৮ই এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে চার জনকে নতুন করে ৬০ দিনের আটকাদেশ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বিবিসি বাংলা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে ওই চার জনের আটকাদেশ দ্বিতীয় দফায় ৬০ দিন বাড়ানো হয়।

মেঘনা আলম

ছবির উৎস, MEGHNA ALAM/FACEBOOK

সরকারি চিঠিতে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(১) ধারায় ক্ষমতাবলে ‘আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী ক্ষতিকারক কার্য হতে বিরত রাখার জন্য’ চার জনের আটকাদেশ বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

এর আগে গত ১১ই মার্চ প্রথম দফায় তাদেরকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেয়া হয়েছিল বলে চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে।

এই চার জনই চট্টগ্রামের বাসিন্দা। এদের মধ্যে দুজন নারী রয়েছেন এবং তারা চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

একজন রেখা আলম চৌধুরী, যিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর এবং কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত প্যানেল মেয়র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

আটকাদেশ পাওয়া আরেকজন চট্টগ্রাম মহানগর যুব মহিলা লীগের সদস্য জিন্নাত সুলতানা ঝুমা।

তাদের দুজনকেই ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

জিন্নাত সুলতানা ঝুমার ভাই মোশাররফ হোসেন আরজু বিবিসি বাংলাকে বলেন, তার বোনকে প্রথমবার এক মাস এবং দ্বিতীয় দফায় দুই মাসের কারাবাস দেয়া হয়েছে।

“তাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে আটকাদেশ দিয়েছে। সে একটা কোম্পানিতে জব করতো। তার আট বছরের একটা ছোট মেয়ে আছে যে প্রতিদিন কান্না করে। বিনা কারণে আমার বোনটাকে ওরা কালো আইনের মাধ্যমে ভরে রাখছে,” বলেন তিনি।

মোশাররফ হোসেন আরজু বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং তিনি জুলাই অভ্যুত্থানে রাজপথে আন্দোলন করেছিলেন বলেও দাবি করেন।

“আমি মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক। গণঅভ্যুত্থান করছি আমরা এই ফ্যাসিবাদের কালো আইন নির্মূল করার জন্য। যদি এটা এখনও থেকে যায় তাহলে কেন আমরা আন্দোলন করলাম? কেন আমরা এত বছর আন্দোলন সংগ্রাম রাজপথে ছিলাম? জনগণ যদি এর সুফল না ভোগ করে তাহলে এ আন্দোলন কেন?”

আটকাদেশ দেয়া বাকি দুই জন হলেন হালিশহরের মো. মশিউর রহমান এবং খুলশী থানার মো. দস্তগীর আহমদ সুমন।

আরো পড়তে পারেন

মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ

গত ৫০ বছরে সব সরকারের আমলেই এই আইনটির প্রয়োগ হয়েছে এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন ঘটেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এই সরকারের মধ্যে অন্তত দুজন উপদেষ্টা রয়েছেন যারা বিনা বিচারে আটক এবং এই আইন নিয়ে অতীতে সোচ্চার ছিলেন।

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের পরিবার বিশেষ ক্ষমতা আইনের ভিকটিম। নব্বইয়ের দশকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করে তার পরিবারের সদস্যকে আটকাবস্থা ও মামলা থেকে মুক্ত করেছিলেন।

এ সরকারের সময় কেন বিশেষ ক্ষমতা আইনটি ব্যবহার হচ্ছে–– এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ফরহাদ মজহার

অবশ্য বিশেষ ক্ষমতা আইনের অপব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য চাইলে লেখক ও তাত্ত্বিক ফরহাদ মজহার বাংলাদেশের অভ্যুত্থান পরবর্তী আইনি কাঠামো ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা নিয়েই কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন।

১৯৯৫ সালে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ফরহাদ মজহার এক মাস জেল খেটেছিলেন।

“হোউল (পুরো) সংবিধানের মধ্যে গণঅধিকার ও জনগণের নাগরিক অধিকার বিরোধী আইন রয়ে গেছে। বিচ্ছিন্নভাবে তো কোনো আইন নিয়ে আলোচনা করতে পারি না। আমি বলবো যে অবশ্যই এ আইনের (বিশেষ ক্ষমতা আইন) বিলুপ্ত হওয়া দরকার।”

“শুধু তাই না, খেয়াল করেন, রাষ্ট্রদ্রোহীতার আইন রয়ে গেছে। এটা তো ব্রিটিশ আমলের কলোনিয়াল আইন। এগুলো কেন থাকবে। রাষ্ট্রদ্রোহীতার আইনে এই সরকারের আমলে কিন্তু গ্রেপ্তার হয়েছে নাগরিকরা, তার নিজের অধিকারের কথা বলতে গিয়ে। এটা তো অ্যাকসেপটেবল (গ্রহণযোগ্য) না,” বলেন তিনি।

এ আইনটির এতটাই অপব্যবহার হয়েছে যে আইনের একটি বাতিল ধারাতেও মামলা এবং জেল খাটার নজির রয়েছে।

২০১৬ সালে ঢাকার আশুলিয়া শ্রমিক আন্দোলনের সময়ে ভূমিকার জেরে আহমেদ জীবন নামে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের একজন নেতা দুই মাস কারাভোগ করেছিলেন। পরে উচ্চ আদালত তৎকালীন সরকারের আটকাদেশ অবৈধ ঘোষণা করে বাতিল ধারায় মামলা না নিতে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

এ আইন নিয়ে গবেষণা করেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক। তিনি জানান, আইনটি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তারা একটা ধারণা পেয়েছেন যে এটি প্রণয়নের পর থেকে প্রথম ৩০ বছরে ৩০ হাজার থেকে দুই লাখের মতো ব্যক্তি এর আওতায় আটকাদেশ পেয়েছিলেন।

তবে গত ৫০ বছরেরও বেশি সময়ে এই আইনের আওতায় কত জনকে আটক করা হয়েছে এর কোনো সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সব সরকারের আমলে এই আইনের ব্যবহার হয়েছে বলেও তিনি জানান।

“স্বাধীন দেশে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থাকে। আমাদেরও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এসেছিল এবং ওই প্রেক্ষিতেই আইনটা করা হয়েছিল। তারপর থেকে সব সরকারই এটা অপব্যবহার করেছে।”

“বলা হয় যে ৩০ হাজার থেকে দুই লাখ লোক পর্যন্ত আটক হয়েছে এই আইনে প্রথম ৩০ বছরে। অতএব ৩০ হাজার থেকে দুই লাখ লোক যখন আটক হয়েছে, এটা তো অবশ্যই এমন না যে সবাই দেশে নাশকতা করে বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে ব্যস্ত ছিল, এটা হতেই পারে না। এটা এখন যেমন হচ্ছে একটা খুনের জন্য দেড়শ লোককে আসামি করা হচ্ছে, ওইটা একই অপপ্রয়োগ হয়েছে।”

ড. শাহদীন মালিক

বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকাদেশ নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।

প্রথম ৩০ বছরে এ আইনের অপব্যবহার বেশি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তী ২০ বছরে উচ্চ আদালতের শক্ত অবস্থানের কারণে আটকাদেশের ঘটনা অনেক কমে আসে বলে ধারণা পাওয়া যায়।

বিশেষ ক্ষমতা আইনে তিন ধারায় আটকাদেশের ক্ষেত্রে ‘দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি’, ‘বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষতি’ এবং জননিরাপত্তার জন্য হুমকি, রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি, ঘৃণা ও উত্তেজনা সৃষ্টি করার মতো অপরাধ করতে পারে এমন বিষয়গুলো আমলে নেয়ার কথা বলা হয়।

বিশেষ ক্ষমতা আইনটির অপব্যবহার নিয়ে সোচ্চার মানবাধিকার আইনজীবী সারা হোসেন। সবশেষ মেঘনা আলমের আটকাদেশের বিরুদ্ধে রিটের মামলায় আইনজীবী ছিলেন তিনি।

বিতর্কিত এই আইনটি কেন বিলুপ্ত হচ্ছে না- সে প্রশ্ন তোলেন সারা হোসেন। কারণ আইনটিতে সরকার চাইলে যে কাউকে আটকাদেশ দিতে পারেন।

“আটকাদেশে দেয়া মানেই আপনি কোনো কারণ না জানিয়ে তুলে নিচ্ছেন এবং আটকের পর তাকে কোনো ধরনের আইনি পরামর্শের সুযোগ দেয়া হয় না। তাকে ৩০ দিনের জন্য একদম আটক অবস্থায় রাখা যায়। সেটা এক্সটেন্ড করে করে ছয় মাস পর্যন্ত রাখা যায় কোনো একটা রিভিয়েরও আগে। সেই ধরনের একটি আইন কেন বাংলাদেশে এই মুহূর্তে থাকবে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন আমাদের সবার জন্য। আর কেন এটা এই মুহূর্তে বাতিল করা যাচ্ছে না সেটাও বোঝা যাচ্ছে না।”

১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের তিনটি ধারা, ১৬, ১৭ ও ১৮ ধারা, এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯০ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাতিল করা হয়। ১৯৯১ সালে বিএনপি প্রথম সরকারের আমলে সংসদে আইনের সংশোধনী পাস হয়।

আইনের ৩৪ ক ধারায় বলা হয়েছে এই আইনের অধীনে কোনো ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে।

 সারা হোসেন

আইনটির অপপ্রয়োগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রসঙ্গে উদ্বেগ নিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের সাংবিধানিক কাঠামোই এখনও এ ধরনের আইন প্রয়োগ এবং টিকে থাকার জন্য দায়ী।

“একটা শ্রেণি সবসময় আইনের মাধ্যমে জনগণের নাগরিক অধিকার হরণের কথা বলে। এরাই সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার কথা বলে। এখন এগুলো বলতেছেন কেন আপনারা? তখন খেয়াল ছিল না আটই অগাস্ট যে এটা হবে? তখন যে আমরা বার বার বলছিলাম এই যে গণঅভ্যুত্থান হবার পরে আপনার গণসার্বভৌমের ভিত্তিতে একটা নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে!”

“পুরনো কলোনিয়াল আইন-টাইন সবই ঝাড়েমূলে ফেলে দেন। তারপর তো নাগরিক অধিকার আনবেন। এখন আপত্তি করছেন কেন? কেননা আজকে যারা এটা বলছে, কয়দিন পরে তাদেরকেই রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে শেখ হাসিনা ধরবে, ধরবে না? টিকিয়ে রেখেছেন কী জন্য? যে আইনে এ সরকার টিকে আছে এই সরকারই তো বৈধ না।”

বিতর্কিত এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলেও আইনটি কেন সব সরকার টিকিয়ে রেখেছে এ প্রশ্নে শাহদীন মালিক বলেন, এ ধরনের মামলা প্রতিবেশী প্রায় সব দেশেই আছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে সমস্যা অপপ্রয়োগের।

“টেরোরিজমের যে ব্যাপারটা, যে আপনি হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এখন যদি নরমালি জঙ্গি হামলা করে মানুষকে মারা পর্যন্ত সরকারকে অপেক্ষা করতে হয় সেটা তো কাম্য না। এই জন্য বিশেষ ক্ষেত্রে এইটার একটা প্রয়োজনীয়তা আছে। এই ধরনের আইন দুনিয়ার বেশিরভাগ দেশেই আছে। কিন্তু কথা হলো গণতান্ত্রিক দেশে এটার অপপ্রয়োগ হয় না, আর আমাদের মতো দেশে অপব্যবহার হয়।”

বিতর্কিত আইনে গ্রেপ্তার এবং আটকাদেশ কেন দেয়া হচ্ছে এ বিষয়টি জানতে স্বরাষ্ট্র ও আইন উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী স্বীকার করেন যে মেঘনা আলম ছাড়া আরও ব্যক্তিদের বিশেষ ক্ষমতা আইনে সরকার কারাবাস দিচ্ছে। তিনি দাবি করেন, এটি বেআইনি নয়।

অন্যদিকে মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ ছিল বলে মন্তব্য করেছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।