Source : BBC NEWS

আরজি কর মামলায় প্রকৃত দোষীদের সাজা চেয়ে সরব প্রতিবাদীরা।

ছবির উৎস, Getty Images

৫৫ মিনিট আগে

প্রায় পাঁচমাস আগে একটা ঘটনা পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে ‘প্রতিবাদ’ শব্দটার একটা নতুন সংজ্ঞা তুলে ধরেছিল। কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে এক পড়ুয়া-চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় বিচার চেয়ে রাস্তায় নামেন অসংখ্য মানুষ।

মুখে মুখে ছড়িয়ে পরেছিল ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’-এই স্লোগান।

সেই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পড়ুয়া-চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় দোষী সঞ্জয় রাইকে সোমবার আমৃত্যু কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত।

সাজা ঘোষণার সময় বিচারক অনির্বাণ দাস রাষ্ট্রকে তার দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে জানিয়েছিলেন, কর্মরত চিকিৎসককে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ ও হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের বিষয়েও একাধিক ক্ষেত্রে গাফিলতির কথা আদালতের রায়ে উল্লেখও করেছেন।

সঞ্জয় রাইয়ের সাজা ঘোষণা হওয়ার পর থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

নিহত চিকিৎসকের অভিভাবক, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

অভিযোগ তুলেছেন, তদন্তকারী সংস্থা এই মামলাকে পুরোপুরি প্রমাণ করতে পারেনি।

তবে অনেকে আবার মনে করেন, আর জি কর মামলার আইনি প্রক্রিয়া অন্তত এক ধাপ এগিয়েছে এবং বিচারক অনির্বাণ দাসের রায় পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের জন্য একটা রাস্তা খুলে দিয়েছে।

কেউ আবার আদালতের রায়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক মহলও এই সাজাকে কেন্দ্র করে বেশ সরগরম।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী জানিয়েছেন, তিনি দোষীর ফাঁসির পক্ষে। সেই আর্জি নিয়েই নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার।

বিরোধীরা বাম ও বিজেপি নেতারাও সঞ্জয় রাই বাদে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত বাকিদের শাস্তি কেন হলো না সেই নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন।

এই সমস্ত কিছুর মাঝেই এই প্রশ্ন উঠেছে, তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এবং বিচারের দাবি তুলে জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশাপাশি যে বিপুল সংখ্যক মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন, সেই আন্দোলনের ‘কাঙ্ক্ষিত ফল’ কি মিলেছে?

আরও পড়তে পারেন
 সোমবার শিয়ালদহ আদালত সংলগ্ন চত্বরে আন্দোলনকারীদের জমায়েত।

ছবির উৎস, Getty Images

প্রতিবাদীদের বক্তব্য

আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনা গত নয়ই আগস্ট প্রকাশ পাওয়ার পর রাজ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। নিহত চিকিৎসকের সতীর্থরা প্রথমে আন্দোলন শুরু করেন। ক্রমে অন্যান্য হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরাও যোগ দেন।

এরই মাঝে নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নারীদের রাত দখলের ডাক দেওয়া হয়। শুধু কলকাতায় নয়, রাজ্য এমন কি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নারীরা রাতের রাস্তা দখল করেন। তাদের সঙ্গে সামিল হন বহু পুরুষ। সামিল হন প্রবীণ এবং শিশুরাও।

একসময় জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে আন্দোলনে এগিয়ে আসেন সিনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, রাতভর অবস্থান এবং তাদের রিলে অনশনের মতো একের পর এক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে রাজ্য তথা দেশ।

পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাদের অপসারণের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার কারণে রাজ্য সরকারের সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের সংঘাতও বেঁধেছে।

আন্দোলনের জেরে সরকার ‘চাপে’ পড়েছে বলে সেই সময় মনে করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সাম্প্রতিক ঘটনার আবহে কী মনে করছেন আন্দোলনে সামিল ব্যক্তিরা?

রাত দখলের কর্মসূচিতে সামিল হয়েছিলেন কলেজ পড়ুয়া মৌ মাইতি। আদালতের রায়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আশা করেছিলাম দৃষ্টান্তমূলক একটা কিছু হবে। বেশ নিরাশ লাগছে। আমরা প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলাম বিচারের আশায়। কিন্তু পেলাম কই!”

হাওড়ার বাসিন্দা সৌম্য গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, আদালতের রায়ে তিনি সন্তুষ্ট নন। তার কথায়, “এই ব্যাপক আন্দোলন শুধুমাত্র আরজি করের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হয়নি। একের পর এক নারী নির্যাতন, বিচার না পাওয়া, অপরাধীদের আড়াল করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল তারই বহিঃপ্রকাশ দেখা গিয়েছিল রাস্তায়। নিহত চিকিৎসকের জন্য শুধু নয়, অতীতের বহু ঘটনার জন্য বিচার চেয়ে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন।”

“সেই সময় মনে হয়েছিল এই বিপুল জনমতের কারণে বোধ হয় কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছে। সুবিচার আমরা ছিনিয়ে আনতে পারব। কিন্তু হয়নি। শুধুমাত্র সঞ্জয় রাইকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাকে শাস্তি দিয়ে কী হবে?”

রাত দখলে রাস্তায় নেমেছিলেন বহু নারী, পুরুষ, প্রবীণ নাগরিক এমনকি শিশুরাও।

ছবির উৎস, Getty Images

নারীদের রাত দখলের কর্মসূচির মূল উদ্যোগীদের মধ্যে ছিলেন শতাব্দী দাশ। পেশায় শিক্ষিকা এবং ফেমিনিস্ট-অ্যাক্টিভিস্ট শতাব্দী দাশ বলেছেন, “সাধারণ মানুষ রায়ে হতাশ, রাজ্য সরকারের ভূমিকায় হতাশ, পুলিশ ও সিবিআইয়ের তদন্তেও হতাশ। কেউ কেউ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কেউ এটা ভেবে হতাশ হচ্ছেন যে এত কিছু করেও কিছু হলো না।”

“তারা হতাশ হতে পারেন কিন্তু কখনওই এটা মনে করেন না, যে আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। বরং তারা মনে করেন রাজ্য সরকার ব্যর্থ হয়েছে। রাজ্য সরকার এটা বোঝানোর চেষ্টা করছে- এত আন্দোলন করে কী হলো, আমরাই ফাঁসি করিয়ে দিতে পারতাম, সেই চেষ্টাও সফল হবে না।”

একই মত পোষণ করেন সুঁটিয়ার নিহত প্রতিবাদী শিক্ষক বরুণ বিশ্বাসের দিদি প্রমীলা বিশ্বাসও। আরজি কর আন্দোলনের শুরু থেকে সামিল ছিলেন তিনি।

তার কথায়, “আন্দোলন যে বৃথা যায়নি তার বড় প্রমাণ হলো রাজ্য সরকার যেভাবে আসফাকুল্লা নাইয়ার মতো প্রতিবাদী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে।”

“আর আন্দোলন সফল কী ব্যর্থ সেটা এইভাবে প্রমাণ হয় না। যদি সঞ্জয় রাইয়ের ফাঁসির সাজা দেওয়া হতো তাহলে কী আমরা বলতে পারতাম যে আন্দোলন সফল? পারতাম না। কারণ এই অপরাধে সঞ্জয় একা ছিল না বলে অনেকেই মনে করে কিন্তু তার স্বপক্ষে প্রমাণ সিবিআই দিতে পারেনি। তথ্য প্রমাণ লোপাট হয়েছে সেখানে পুলিশ এবং আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা রয়েছে বলেও অভিযোগ। তারও প্রমাণ নেই।”

ড. আসফাকুল্লা নাইয়া।

‘মানুষ বারেবারে আশাহত হয়েছে’

আর জি কর আন্দোলনের সামিল প্রতিবাদী জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে অন্যতম ড. আসফাকুল্লা নাইয়া। তার কথায়, “মানুষ বারেবারে আশাহত হয়েছে। এবার আরও একবার আশাহত হলেন। তারা কিন্তু আশা ছাড়েননি। এখনও ছাড়বেন না।”

“এই আমৃত্যু কারাদণ্ড কিন্তু অপরাধ করেও বাইরে যারা ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই সমস্ত আসামিদের কাছে একটা কড়া বার্তা বয়ে নিয়ে যাবে বলেই আমি মনে করি।”

তারই স্বর প্রতিধ্বনিত হয়েছে প্রমীলা বিশ্বাসের কণ্ঠে। তার ভাই তথা উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার সুটিয়া অঞ্চলের স্কুলশিক্ষক বরুণ বিশ্বাসকে ২০১২ সালে হত্যা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

তিনি ওই এলাকায় নারী নির্যাতন, নারী পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন।

প্রমীলা বিশ্বাস বলেছেন, “রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ানোটা কঠিন। আমি এত বছর ধরে লড়ছি বিচার পাইনি। কিন্তু হাল ছাড়িনি। আর জি করের মামলাতেও হাল ছাড়ব না। একত্রিত হয়ে আমরা লড়াই চালাব যতদিন না বিচার পাচ্ছি।”

রাত দখলের কর্মসূচিতে সামিল ছিলেন সম্প্রীতি মুখার্জী। তিনি জানিয়েছেন বিচার না পাওয়া অব্দি আন্দোলন চলবে। তার কথায়, “এই রায় এবং সরকারের প্রতিক্রিয়া কর্মক্ষেত্র থেকে সমাজের গণপরিসরে আমাদের নিরাপত্তার প্রশ্নে প্রহসন এবং এতে আমরা দমছি না। আমরা দ্বিগুণ শক্তিতে নামব।”

গত অগাস্ট মাসে আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় একজন তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের ডাক্তারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিবাদ করতে শুরু করেন

ছবির উৎস, Getty Images

তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ

আরজি কর মামলায় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীদের মধ্যে অনেকেই।

জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের তরফে ড. অনিকেত মাহাত বলেন, “রায়ের আগে থেকেই আমরা সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। এতদিন হয়ে গেল একমাত্র সঞ্জয় রাই বাদে কেন কারও বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিতে পারল না? এই নারকীয় ঘটনায় একমাত্র সঞ্জয় যে ছিল না সেটা তো স্পষ্ট। কিন্তু তার স্বপক্ষে কেন সিবিআই কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। এটা তো তাদের ব্যর্থতা।”

“আন্দোলনের শুরু থেকেই আমরা টালা থানার ওসি, আরজি করের সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের মতো একাধিক ব্যক্তির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যাচ্ছি। অথচ সিবিআই কিন্তু কোনও প্রমাণ দিতে পারছে না। তাহলে গাফিলতি কার?”

শিয়ালদহ আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু একইসঙ্গে বলেছেন, “এই আন্দোলন চলবে যতক্ষণ না সমস্ত দোষীরা শাস্তি পাচ্ছে।”

রাজনৈতিক তরজা

সঞ্জয় রাইয়ের সাজা ঘোষণা হওয়ার পর থেকে কিন্তু রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে আর জি করের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে উঠেছিল তাতে চাপে ছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সাম্প্রতিক রায়ে কিছুটা হলেও ‘স্বস্তিতে’ সরকার, কারণ এই সঞ্জয় রাইকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশ এবং মুখ্যমন্ত্রী তার ফাঁসির পক্ষে সওয়াল করেছিলেন।

সেই অবস্থানে তিনি এখনও অনড়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আদালত এই ঘটনাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে মনে না করায় আমি আহত। এই ঘৃণ্য অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন জানাব আমরা।”

পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য পুলিশের হাতে দায়িত্ব থাকলে এতদিনে দোষীর ফাঁসি হয়ে যেত।

ফাঁসির আরজি জানিয়ে ইতিমধ্যে হাইকোর্টের দ্বারস্থও হয়েছে রাজ্য।

অন্যদিকে, বিজেপির সুকান্ত মজুমদার অন্য কথা বলেছেন। তার কথায়, “এটাই এই মামলার শেষ নয়। সুপ্রিমকোর্ট যেহেতু স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দেখছে, আগামী দিনে নতুন দিক খুলে যেতে পারে।”

বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর
বিশেষজ্ঞদের মতে আরজি কর আন্দোলনের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ।

ছবির উৎস, Getty Images

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাইকোর্টের এক আইনজীবী বলেন, “আদালত বিচার করে তার সামনে যে প্রমাণ পেশ করা হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে। শিয়ালদহ আদালতের রায়ে স্পষ্টভাবে পুলিশ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দিক থেকে একাধিক গাফিলতির উল্লেখ রয়েছে। সেই দিক থেকে পরবর্তীকালে আইনি প্রক্রিয়ার জন্য একটা রাস্তা খুলে গিয়েছে বলে আমি মনে করি।”

“জনমতকে সন্তুষ্ট করার দায় কিন্তু আদালতের নয়। লোকে ফাঁসি চেয়েছে বলেই ফাঁসি দিয়েদিলাম, তাই হয় নাকি! আর আর জি কর মামলা তো শেষ হয়ে যায়নি। সিবিআই এখনও সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেয়নি।”

আর জি কর আন্দোলনের প্রভাব প্রশ্নে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর মতে “এখানে লড়াইটা সিস্টেম বনাম জনসাধারণের। এই মামলায় সিস্টেম বলতে বোঝাচ্ছে পুলিশ, আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, রাজ্যপ্রশাসন, সিবিআই এবং বিচার ব্যবস্থা। আসলে সিস্টেম এমন একটা অনময়ীন, দুর্নীতিগ্রস্থ আবর্তচক্র তৈরি করেছে যেটা দুর্ভেদ্য। রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশের মধ্যে একটা সমঝোতা তৈরি হয়ে যায়। সেখানে দাঁড়িয়ে সুবিচার পাওয়া কঠিন।”

তার মতে আর জি কর আন্দোলনের প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলছেন, “এটা কোনওভাবেই আর জি কর আন্দোলনের ব্যর্থতা নয়। কারণ এই রাজ্যে শাসকের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়ানোটাই কঠিন। আমরা জানি এখানে প্রতিবাদ করলে কীভাবে মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হয়। ইতিমধ্যে প্রতিবাদী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কিন্তু তেমন পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।”

“কিন্তু সমস্ত কিছুকে উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষ যে রাস্তায় নেমেছিলেন, শাসকের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন সেটাই এই আন্দোলনের সাফল্য।”

অধ্যাপক এবং সমাজকর্মী শাশ্বতী ঘোষও একই মত পোষণ করেন। তার কথায়, “পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। গতকালও ঘটেছে।”

“কিন্তু আন্দোলনের সময় যে মেয়েরা এগিয়ে এসেছিলেন, এই নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছিলেন- সেটাই তো এই আন্দোলনের সাফল্য। ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের ঘটনায় মেয়েরা তো মুখ খুলতেই চায় না। “