Source : BBC NEWS

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন
ডিসির শহরতলীতে দুই ইসরায়েলি দূতাবাসের কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম এই তথ্য জানিয়েছেন।
মার্কিন গণমাধ্যম সিবিএস
এর তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রাত
৯টার দিকে ক্যাপিটাল ইহুদি জাদুঘরের একটি অনুষ্ঠান থেকে ওই দুই দূতাবাস কর্মী
বেরিয়ে আসার সময় তাদের ওপর গুলি চালানো হয়।
নিহতদের মধ্যে একজন
পুরুষ এবং একজন নারী ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ইয়েখিয়েল লেইটার কিছুক্ষণ আগে এক সংবাদ সম্মেলনে
জানিয়েছেন, নিহত দুজন ছিলেন তরুণ প্রেমিক যুগল, যাদের কিছুদিনের মধ্যে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।
ছেলেটি এই
সপ্তাহে একটি আংটি কিনেছিল, আগামী সপ্তাহে
জেরুজালেমে তার প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল,” বলেন লেইটার।
তিনি আরো বলেন, “তারা এক অপূর্ব যুগল ছিল”।
এদিকে এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে এক সন্দেহভাজনকে আটক
করেছে পুলিশ। তার নাম এলিয়াস রদ্রিগেজ। গ্রেপ্তারের পর সন্দেহভাজন ব্যক্তি ‘ফ্রি
প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দিয়েছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, ৩০ বছর বয়সী
শিকাগোর এই ব্যক্তিকে “জাদুঘরের বাইরে এদিক-ওদিক ঘুরতে” দেখা গেছে,
যেখানে গুলি চালানো হয়েছিলো।
ওয়াশিংটনের পুলিশ
প্রধান পামেলা স্মিথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি চারজনের একটি দলের কাছে গিয়ে একটি
হ্যান্ডগান বের করে ওই দুজনকে গুলি করেন। রদ্রিগেজ বর্তমানে
পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।
এফবিআইয়ের
ওয়াশিংটন ফিল্ড অফিসের সহকারী পরিচালক স্টিভ জেনসেন আরো বলেন, হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে এর সাথে ”
সন্ত্রাসবাদের” কোন যোগসূত্র আছে কিনা এবং হামলার উদ্দেশ্য “ঘৃণা” (হেইট ক্রাইম)কিনা
তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মার্কিন হোমল্যান্ড
সিকিউরিটি প্রধান ক্রিস্টি নয়েম “অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার”
প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, অন্যদিকে জাতিসংঘে
নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত এই ঘটনাটিকে “ইহুদি-বিরোধী সন্ত্রাসবাদের
জঘন্য কাজ” বলে অভিহিত করেছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছেন
এবং বলেছেন এটি ইহুদি-বিরোধীদের কাজ।
“এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড,
যা স্পষ্টতই ইহুদি-বিদ্বেষকে ঘিরে সংঘঠিত হয়েছে,
তা এখনই বন্ধ করতে
হবে! এখানে ঘৃণা এবং মৌলবাদের কোনও স্থান নেই, ” ট্রুথ সোশ্যালে জানান ট্রাম্প।
সেখানে ভুক্তভোগীদের
পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট ইসহাক হার্জগ হামলার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেছেন, তিনি “মর্মাহত”।
তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “এটি একটি ঘৃণ্য এবং ঘৃণামূলক ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাসী হামলা।”
তিনি বলেন, “আমেরিকা ও ইসরায়েল একসঙ্গে আমাদের অভিন্ন মূল্যবোধ রক্ষা করবে। সন্ত্রাস ও ঘৃণা আমাদের ভাঙতে পারবে না।” এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদি সম্প্রদায়ের পাশে থাকার কথাও জানান।
ইসরায়েলি দূতাবাসের মুখপাত্র তাল নাইম কোহেন, এক্স-এ একটি বিবৃতিতে বলেছেন, “আজ সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটাল ইহুদি জাদুঘরে একটি ইহুদি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সময় ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মীকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে।”
“স্থানীয় এবং ফেডারেল উভয় স্তরের আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে যে তারা বন্দুকধারীকে গ্রেপ্তার করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ইসরায়েলের প্রতিনিধি এবং ইহুদি সম্প্রদায়কে রক্ষা করবে।”