Source : BBC NEWS

ছবির উৎস, Getty Images
এক ঘন্টা আগে
ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ তাদের পশ্চিম আর পূর্ব কমাণ্ডে দুটি নতুন সেক্টর গঠন করার একটি প্রস্তাব দিয়েছে। এসব সেক্টরে দেড় ডজন ব্যাটেলিয়ন ও প্রায় ১৭ হাজার নতুন রক্ষী নিয়োগ দেয়া হতে পারে। তবে এখনো সেই প্রস্তাবে দিল্লি থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন আসেনি।
একই সঙ্গে বাহিনীতে নতুন করে ১৬টি ব্যাটালিয়নও গড়া হবে, সেখানে প্রায় ১৭ হাজার প্রহরী নিয়োগ করা হবে বলে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সূত্র উদ্ধুত করে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। সীমান্তে প্রহরা আরো জোরদার করতেই এই প্রস্তাব বিএসএফের।
বাহিনীর এক কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, “সব বাহিনীর মতোই বিএসএফেরও শক্তি বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে। সেই হিসাবেই আগামী কয়েক বছর ধরে নতুন নিয়োগের কথা ভাবা হয়েছে। তবে নতুন ব্যাটালিয়ন গড়ার ব্যাপারে এখনও সরকার চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেয় নি বলেই আমরা জানি।”
বর্তমানে বিএসএফের ১৯৩টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে।
“এই প্রস্তাবটি প্রায় চার-পাঁচ বছরের পুরনো। মাঝে মাঝেই এটা নিয়ে আলোচনা হয়। এটা আমাদের তরফ থেকে এখনও প্রস্তাব হিসাবেই আছে, সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া যায় নি,” বিবিসিকে জানিয়েছেন বিএসএফের অন্য একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
তৃতীয় আরেকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, “সংবাদমাধ্যমের একাংশে এ নিয়ে যে খবর ছাপা হয়েছে, সেটা আমাদের নজরে এসেছে। তবে বাহিনীর তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় নি কারণ সরকার ওই প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে, এই তথ্যও বিএসএফের কাছে এখনও আসে নি।”

ছবির উৎস, Getty Images
মিজোরামে নতুন সেক্টর?
বিএসএফের বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী পূর্ব কমান্ডের অধীনে ছয়টি ফ্রন্টিয়ার বা সীমান্ত অঞ্চল আছে। এর মধ্যে ‘এম অ্যান্ড সি’ নামের সীমান্ত অঞ্চল, অর্থাৎ মিজোরাম এবং আসামের কাছাড় এলাকার আন্তর্জাতিক সীমান্ত প্রহরা দেয়।
এই ফ্রন্টিয়ারের অধীনেই আবার মনিপুরে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিযুক্ত আছে বিএসএফ।
‘এম অ্যান্ড সি’ ফ্রন্টিয়ারের অধীনে এখন তিনটি সেক্টর রয়েছে – আসামের শিলচর, মিজোরামের আইজল এবং মনিপুরে অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য পৃথক সেক্টর। এখানে মোট ১২টি ব্যাটালিয়ন কাজ করে।
“এখানে নতুন একটা সেক্টর গড়ার প্রস্তাব অনেক দিন আগেই দেওয়া হয়েছিল। নতুন কোনও ফ্রন্টিয়ার বা ফিল্ড কমান্ড বেস নয়, একটা নতুন সেক্টর গড়ার প্রস্তাব রয়েছে। বিষয়টা এমন নয় যে পহেলগামের ঘটনার পর নতুন করে কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে,” বলছিলেন পূর্ব কমাণ্ডে কর্মরত একজন সিনিয়ার অফিসার।
উত্তর পূর্ব ভারতে কর্মরত আরেকজন বিএসএফ কর্মকর্তা বলছেন, “মিজোরামে নতুন একটি সেক্টর করার প্রস্তাব যদিও এসেছিল কয়েক বছর আগে, তবে আদৌ এখানে নতুন সেক্টরের প্রয়োজনীয়তা আছে কী না, তা নিয়ে আমাদের অফিসারদের মধ্যেই একাধিক মত আছে। কিছুই চূড়ান্ত হয় নি এখনও পর্যন্ত।”
‘এম অ্যান্ড সি’ ফ্রন্টিয়ার ছাড়া পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে দক্ষিণ বঙ্গ, উত্তর বঙ্গ, গুয়াহাটি, মেঘালয় এবং ত্রিপুরাতে পাঁচটি ফ্রন্টিয়ার আছে।
সীমান্ত প্রহরা ছাড়াও পূর্ব কমান্ডের অধীনেই রয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তিনটি ব্যাটালিয়ন।
পূর্ব কমাণ্ড ভারত-বাংলাদেশের ৪০৯৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত পাহারা দেয়।

ছবির উৎস, Getty Images
জম্মুতেও নতুন সেক্টর?
বিএসএফের কাছে পশ্চিম কমান্ড বা ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত বরাবরই বাড়তি গুরুত্ব পেয়ে এসেছে।
পশ্চিম সীমান্তের জন্য বিএসএফের পাঁচটি ফ্রন্টিয়ার রয়েছে – কাশ্মীর, জম্মু, পাঞ্জাব, রাজস্থান ও গুজরাত।
সম্প্রতি পহেলগামের হামলা ও তারপরে লাগাতার সীমান্তে গুলিবর্ষণের প্রেক্ষিতে জম্মুতে নতুন একটি সেক্টর গড়ার কথা ভাবছে বিএসএফ, এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের একাংশ।
“এটা ঠিকই সীমান্তের ওদিক থেকে লাগাতার গুলি বর্ষণ হচ্ছে গত কিছুদিন ধরে। আবার পহেলগামের হামলার পরে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোরও দরকার আছে। কিন্তু যে প্রস্তাবটার কথা বলা হচ্ছে, সেটা কিন্তু সম্প্রতি নেওয়া হয় নি। বেশ কয়েক বছরের পুরনো প্রস্তাব জম্মুতে নতুন একটি সেক্টর গঠনের,” জানাচ্ছিলেন দিল্লিতে বাহিনীর সদর দফতরে কর্মরত এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
পশ্চিম কমান্ডের অধীনে ২২৯০ কিলোমিটার লম্বা ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত এবং ৩৩৯ লম্বা নিয়ন্ত্রণ রেখা আছে। তবে নিয়ন্ত্রণ রেখায় সামনের সারিতে থেকে প্রহরার দায়িত্বে সেনাবাহিনীও থাকে।
পশ্চিম ও পূর্ব কমাণ্ড ছাড়া তৃতীয় একটি কমান্ড আছে বিএসএফের – যারা সীমান্ত প্রহরা নয়, অভ্যন্তরীন নিরাপত্তায় কাজ করে।
‘অ্যান্টি নকশাল অপারেশনস কমান্ড’ মধ্য ভারতের রাজ্যগুলিতে মাওবাদী দমনের কাজ করে থাকে।