Source : BBC NEWS

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ হলে তা “বোকামি” হবে, কারণ এটা এমন একটা পথ যা দুই দেশের জন্য “পারস্পরিক ধ্বংস” ডেকে আনতে পারে–– এমনটাই মনে করেন পাকিস্তান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ইন্টারসার্ভিসেস পাবলিক রিলেসন্স (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগ)- এর ডিরেক্টর জেনারল, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী।
তার মতে, “এটা (পারমাণবিক যুদ্ধ) একটা অভাবনীয় এবং অযৌক্তিক ধারণা।”
দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ‘আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগ’-এর ডিরেক্টর লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বিবিসিসহ বেশ কয়েকটা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, পাকিস্তান শান্তি চায়। কিন্তু যদি চাপিয়ে দেওয়া হয় তাহলে তারা যুদ্ধের জন্য সব সময় প্রস্তুত।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি অভিযোগ তুলেছেন, ভারত যেভাবে “ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে” এবং “ন্যারেটিভ” (আখ্যান) ছড়াচ্ছে তাতে বর্তমান আবহে “যে কোনও সময় স্ফুলিঙ্গ দেখা যেতে পারে।”
তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বাস্তবে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধের কোনও আশঙ্কা আছে? না কি প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই এই প্রসঙ্গ আনা হচ্ছে?
এর উত্তরে আহমেদ শরিফ চৌধুরীর মনে করেন, “ভারত আগুন নিয়ে খেলছে”, যার মূলে রয়েছে দুই দেশের সংঘর্ষের আবহে ভারতের তৈরি ন্যারেটিভ।
তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তান ও ভারত দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর দেশ। তাদের মধ্যে সামরিক সংঘাত “একেবারে বোকামি। এটা অকল্পনীয়। এটা একটা অযৌক্তিক ধারণা। কিন্তু আপনারা দেখছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই ভারত এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে, যেখানে সামরিক সংঘাতের সুযোগ তৈরি হয়।”
ভারতের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন তিনি। মি. চৌধুরীর কথায়, “আমরা দেখতে পাচ্ছি কয়েক বছর পর পর (ভারতের পক্ষ থেকে) মিথ্যা ন্যারেটিভ (আখ্যান) তৈরি করা হচ্ছে এবং সেই ন্যারেটিভও সেকেলে।”
“গোটা পৃথিবী এখন জানতে পেরেছে যে প্রথম দিন থেকেই ভারতের যে অবস্থান ছিল সেটা ভিত্তিহীন। এমনটা কয়েক বছর অন্তর অন্তর পুনরাবৃত্তি করা হয়। আসল কথা হলো, ওরা (ভারত) আগুন নিয়ে খেলছে।”

পাশাপাশি তিনি বলেছেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে পাকিস্তান “অত্যন্ত ম্যাচিওরিটির” সঙ্গে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং উত্তেজনা বৃদ্ধি হওয়া থেকে রোধ করেছে। ভারতে ঘটা কোনও ‘চরমপন্থি’ ঘটনায় যদি কোনও পাকিস্তানি নাগরিকের জড়িত থাকার প্রমাণ থাকে তবে, “আমাদের সেই প্রমাণ দেওয়া উচিত। আমরা নিজেরাই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।”
ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার পর চলতি মাসের ছয় ও সাত তারিখের মধ্যবর্তী রাতে ভারতের দিক থেকে পাকিস্তানের কয়েকটা এলাকায় বিমান হামলা চালানো হয়। যে লক্ষ্যবস্তুগুলোকে নিশানা করা হয়েছিল সেগুলো ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ বলে জানিয়েছিল ভারত।
এরপর পাকিস্তানও পাল্টা বিমান হামলা চালায় এবং শেষপর্যন্ত পর দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।
আইএসপিআর-এর ডিজি, লেফটেন্যান্ট আহমেদ শরিফ চৌধুরী বিবিসিকে বলেন, “আমরা শান্তিকে অগ্রাধিকার দিই, আমরা শান্তি ভালোবাসি। এখন পাকিস্তানে আমরা শান্তি উদযাপন করছি।”
“কিন্তু আমরা সবসময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত..। যদি যুদ্ধই প্রয়োজন হয়, তাহলে যুদ্ধই হবে।”
বর্তমান আবহে যুদ্ধ এখনো বিকল্প কি না জানতে চাইলে মি. চৌধুরী বলেছেন, “আসল সংঘাত এখনো রয়েছে। যে কোনও সময় এতে স্ফুলিঙ্গ যোগ করা যেতে পারে। পরিস্থিতির দিকে একবার লক্ষ্য করে দেখুন, ১০ই মে-র পর থেকে কতগুলো দিন কেটে গেছে, কিন্তু ভারতে যে ন্যারেটিভ প্রচার করা শুরু করেছিল, সেটা তা এখনো চলছে।”

ছবির উৎস, ISPR
তিনি ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ রাজনীতির’ দিকে আঙুল তুলেছেন। আহমেদ শরিফ চৌধুরীর কথায়, “ভারত যেভাবে দরকষাকষি করছে সেটা মূলত তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির উন্নতির একটা প্রচেষ্টা বলেই মনে হচ্ছে। সেখানে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতৃত্বের আভাস দেখছেন কি?”
“ওরা বলছে, তাদের দেশ সন্ত্রাস ও একটা সন্ত্রাসী ঘটনার হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে।”
তার মতে, পহেলগামের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে প্রশ্নগুলো ওঠা উচিত, তা তোলা হচ্ছে না।
আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেছেন, ভারত সরকারের কেউ “পহেলগামের ঘটনা নিয়ে কঠিন প্রশ্নগুলো তুলছে না। নিরাপত্তার এত বড় গাফিলতি কীভাবে হলো, সেই বিষয় নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলছে না।”
“এই ঘটনার নেপথ্যে যে কারণ রয়েছে সেগুলো বোঝার আগ্রহ কারও মধ্যে নেই। যারা নিপীড়ন এবং অবিচারের কথা বলছে তাদের কণ্ঠস্বর শুনতে ওরা (ভারত) প্রস্তুত নয়। এই ঘটনাগুলো সেই অবিচারেরই ফলাফল যার অবিচারেরই যেটা তারা নিজেরা করেছে।”
দুই দেশের মধ্যে ‘ব্যাক চ্যানেল’ যোগাযোগ সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে আইএসপিআর-এর ডিরেক্টর জেনারেল বলেছেন, “এই প্রশ্নের উত্তর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিতে পারবে”।
“রাজনীতি ও কূটনীতির বিষয়গুলো আমাদের আওতায় পড়ে না। আমরা অংশীদার হতে পারি কিন্তু এই বিষয়গুলোতে আমরা প্রধান ভূমিকা পালন করি না।”
ভারতীয় জেট ভূপাতিত করার বিষয়েও মন্তব্য করেছেন মি. চৌধুরী।
তিনি বলেন, “পাকিস্তান অত্যন্ত দায়িত্বশীলভাবে সঙ্গে এই সংঘর্ষের মোকাবিলা করেছে। ছয় ও সাতই মে রাতে আমরা আমাদের প্রতিরক্ষার্থে ওদের কড়া জবাব দিয়েছি এবং ওদের ছয়টা বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছি।”
“আমরা চাইলে এর চেয়েও বেশি সংখ্যক বিমানকে ভূপাতিত করতে পারতাম। কিন্তু আমাদের নেতৃত্ব খুব দায়িত্বশীল ছিল এবং তারা পরিপক্ব দৃষ্টিকোণ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।”
আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানিয়েছেন, পাকিস্তান খোলাখুলিভাবে এই হামলার পরে ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে। পাকিস্তান নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং ভারত তাদের প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত করতে পারেনি।
“আমরা কি থেমে গিয়েছিলাম? ভারত কি পাকিস্তানকে প্রতিক্রিয়া স্বরূপ জবাব দেওয়া থেকে ছয় ও সাতই মে-র রাতে আটকাতে পেরেছে?”
“না, পারেনি। কারণ একমাত্র তাদেরই থামানো যায়, যাদের থামানো যেতে পারে।”
গত নয় ও ১০ই মে-র মধ্যবর্তী রাতে ভারত শাসিত কাশ্মীরের প্রতিরক্ষা স্থাপনায় হামলা চালানোর কথা উল্লেখ করে আইএসপিআর-এর ডিজি বলেন, “পাকিস্তান সেই রাতে সিদ্ধান্তমূলকভাবে, সুসংহত এবং আনুপাতিক জবাব দিয়েছিল। আমাদের কাছে যে প্রচলিত সামরিক শক্তি রয়েছে, তার সীমিত ব্যবহার করে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এটা ছিল আমাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার একটা ছোট কিন্তু খুবই কার্যকর প্রদর্শন।”
“আর দেখেছেন, তখনই ভারত পিছু হটতে শুরু করেছে। হঠাৎই তারা সংলাপের কথা বলতে শুরু করে এবং উত্তেজনা প্রশমনের ইচ্ছা প্রকাশ করে।”

ছবির উৎস, AFP via Getty Images
দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনা কে শুরু করেছিল এবং তা কবে শুরু হয়েছিল এই প্রশ্নের উত্তরও জানতে চাওয়া হয়েছিল তার কাছে।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র দাবি করেছেন, ছয় ও সাতই মে-র রাতে হামলার পর “ভারতের ডিজি মিলিটারি অপারেশনস পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করে। আমরা এটা স্পষ্ট করে দিয়েছিলাম যে আমরা আমাদের প্রতিক্রিয়া দেওয়ার পরই কথা (আলোচনা) বলব।”
“১০ই মে-র সকালে আমাদের তরফে উত্তর (ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ) আসে। এরপর আপনারা নিজেরাই দেখেছেন ওদের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ভারতীয় টিভি চ্যানেলে এসে বলছে, পাকিস্তান আর হামলা না চালালে তারাও আর সংঘর্ষ বাড়িয়ে তুলতে চায় না।”
এরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রসঙ্গ টানেন তিনি।
“আমরা সব সময় বলে এসেছি, আমরা শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্র। উত্তেজনাকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলাম আমরাই। ওদের (ভারতের) কাছ থেকে অনুরোধ (উত্তজনা প্রশমনের) তো ছিলই, আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীরাও এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিল।”
“প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বকে এক্ষেত্রে কৃতিত্ব দেওয়া উচিত এবং বিষয়টা প্রশংসনীয়। অন্যান্যদেরও একই ইচ্ছা ছিল এবং ভারতও প্রকাশ্যে বলেছিল যে তারা আর উত্তেজনা বাড়াতে চায় না। তাই আমরা বললাম, ঠিক আছে, (যুদ্ধবিরতি) কেন নয়?”
সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের একটা ভিডিও বিবৃতি ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে তাকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আগে ভারত পাকিস্তান সরকারকে জানিয়েছিল সে দেশের ‘সন্ত্রাসীদের গোপন আস্তানা’কে নিশানা করা হবে।
বিবিসির তরফে আইএসপিআরের ডিজির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে ওই বিষয়ে পাকিস্তানকে আগাম জানানো হয়েছিল কি না। জবাবে তিনি বলেন, “এটা ভারতীয় মিডিয়া পরিচালিত একটা ন্যরেটিভ যা একেবারে হাস্যকর। সেরকম কিছুই ঘটেনি।”
“পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কথা যদি বলতে গেলে বলব, আমরা আমাদের গোয়েন্দা তথ্যের জন্য ভারতীয় সূত্রের ওপর নির্ভর করি না। আমরা ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমকে দেখিয়ে দেখিয়েছি যে যখনই ক্রস-সেকশন রাডার ড্রোন উড়ে আসে আমরা তৎক্ষণাৎ জানি সেটা কোথা থেকে আসছে।”
ভারতের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
“ভারতের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাস রয়েছে। ওরা মনে করে পাকিস্তান একটা দুর্বল দেশ এবং আমাদের নিয়ে ওরা যা খুশি তাই করতে পারে। সাম্প্রতিক সংঘর্ষের সময় আমরা একাধিক স্তরে ওদের ঔদ্ধত্যকে ভেঙেছি।”
“সুতরাং যখন ওরা দাবি করে যে আমাদের আগে থেকেই জানিয়েছিল, তার জবাবে আমরা বলছি- আপনার কাছ থেকে কোনও তথ্যের দরকার নেই। আমরা জানি আপনারা কেমন প্রতিযোগী এবং আপনাদের যোগ্যতা কী?”

তবে পাকিস্তান যে ভারতের বিষয়ে সব সময় সতর্ক থাকে সে কথাও জানিয়েছেন আহমেদ শরিফ চৌধুরী। তার কথায়,
“একজন সৈনিক হিসেবে আমি আপনাদের বলতে পারি, আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে ওদের (ভারতকে) লক্ষ্য করি। ওরা কী করছে এবং কেন করছে তা লক্ষ্য রাখি। আমরা সব সময় সতর্ক রয়েছি ও প্রস্তুত আছি।”
বাহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মোহম্মদের গোপন আস্তানায় হামলা চালিয়েছে বলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবির বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার জবাবে আইএসপিআর-এর ডিজি দাবি করেছেন, এটা ভারতের পুরানো ন্যারেটিভ যা তারা বারবার পুনরাবৃত্তি করে।
তার কথায়, “বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে ও মুজাফফরাবাদের যেসব জায়গায় তারা টার্গেট করেছিল সেগুলো সবই মসজিদ ছিল। পরদিন এই জায়গায় মিডিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয়।”
“এটা কি কখনো সম্ভব যে সেখানে রাত্রিবেলায় সন্ত্রাসী ও তাদের ক্যাম্প ছিল আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শত শত মানুষের সামনে তার সমস্ত চিহ্ন মুছে ফেলা হয়েছে?”
“এসব অভিযোগ প্রমাণ করার মতো কোনও প্রমাণ ওদের (ভারতের) কাছে নেই, কোনও যুক্তিও নেই। পাকিস্তান সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ওদের (ভারতের) কাছে যদি কোনও প্রমাণ থাকে, তাহলে তা যেন প্রকাশ্যে আনা হয়। আমরা তদন্ত করে দেখব। কিন্তু সেটার জন্যও প্রস্তুত ওরা প্রস্তুত নয়।”
যুক্তরাজ্যে ভারতীয় হাইকমিশনার একটা ছবি গণমাধ্যমের সামনে এনে অভিযোগ তুলেছিলেন যে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা জইশ-ই-মোহম্মদ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির শেষকৃত্যের নামাজের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ওই ছবির প্রসঙ্গ টেনে মি. চৌধুরীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল।
আহমেদ শরিফ চৌধুরী যুক্তি দিয়েছেন, “জানাজার নামাজের প্রসঙ্গে বলি- বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে বা মুজাফফরাবাদ, সাম্প্রতিক সময়ে বা তার আগে, যাদের মৃত্যু হয়েছে তারা আমাদের দেশের সন্তান। আমার কাছে তাদের সকলের ছবি রয়েছে, আমি আপনাকে দেখাতে পারি।”
“এই শিশুদের একবার দিকে তাকান, তাদের মুখের দিকে দেখুন। তার জানাজায় কি পাক সেনা যোগ দেবে না? পাক প্রশাসন কি সেখানে যাবে না?”

কিন্তু জইশ-ই-মোহম্মদ যে আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষিত একটা ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে স্বীকৃত। পাকিস্তানের সামরিক কর্মকর্তারা যদি ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের পরিবারের শেষকৃত্যে অংশগ্রহণ করেন, তাহলে কি তা নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হবে না?
এই প্রশ্নের জবাবে আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেছেন, “আমরা কবে থেকে ভারতকে খুশি করবে এমন সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছি? ভারত যা বলে আমরা কি সেটাই করতে শুরু করব? আমরা তা করি না।”
“এখনও পর্যন্ত বা ভবিষ্যতেও ভারতের কেউই কখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না যে ভারতকে খুশি করতে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা আমাদের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।”
“এই সেনাবাহিনী, এই সরকার, এই রাষ্ট্র শুধুমাত্র পাকিস্তানের জনগণের কাছেই ঋণী।”
তিনি অভিযোগ তুলেছেন, ভারত পাকিস্তানের যে কোনও জায়গায় বোমা ফেলবে এবং তারপর দাবি করবে যে সেখানে জইশ-ই-মোহম্মদের লোক রয়েছে।
আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেছেন, “(ভারত) আমাদের জইশ-ই-মোহম্মদের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও প্রমাণ দিক। প্রমাণ নিয়ে আসুক তারা। বাহাওয়ালপুরে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ শিবির রয়েছে সেটা তারা প্রমাণ করে দেখাক।”
আইএসপিআর-এর ডিজির কথায়, “আমরা সন্ত্রাসবাদকে ঘৃণা করি। আমাদের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসীদের কোনও ধর্ম নেই, বিশ্বাস নেই, মানবতার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। এরা মানবতার বাইরে।”
“একজন সন্ত্রাসী শুধুমাত্র একজন সন্ত্রাসী। যদি কেউ প্রমাণ দেয় যে কোনও পাকিস্তানি নাগরিক সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত রয়েছে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা নিজেরাই ব্যবস্থা নেব।”