Source : BBC NEWS

দাবানল এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি

ছবির উৎস, Getty Images

এক ঘন্টা আগে

ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানলের নিয়ন্ত্রণে পানির সমস্যার বিষয়টির স্বাধীন তদন্ত চেয়েছেন সেখানকার গভর্নর। ওদিকে দাবানল আক্রান্ত প্যাসিফিক প্যালিসেইডও ইটন এলাকায় রাত্রিকালীন কারফিউ দেয়া হয়েছে।

আগুনের কারণে এখন পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

লস এঞ্জেলস পুলিশ প্রধান ম্যাকডনেল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন শুধু অগ্নিনির্বাপণ ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলোকেই অনুমতি দেয়া হবে।

এছাড়া যেসব অধিবাসীরা আক্রান্ত এলাকা ছেড়ে গেছে বিপজ্জনক পরিস্থিতির কারণে এখনই তাদের না ফেরার অনুরোধ করেছেন তিনি।

একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে পুলিশ ওইসব এলাকা থেকে কিছু ব্যক্তিকে আটক করলেও লুটপাটের জন্য কাউকে আটক করা হয়নি।

ওদিকে বাতাস আরও তীব্র হওয়ার পূর্বাভাস থাকায় আগুন আবারো ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে।

লস এঞ্জেলস সিটি মেয়ার কারেস ব্যস শহরের অধিবাসীদের তার কর্মকর্তাদের ওপর আস্থা রাখার অনুরোধ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে তিনি আক্রান্ত এলাকা যতটা সম্ভব পরিদর্শন করবেন ও অধিবাসীদের সঙ্গে কথা বলবেন।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বহু স্থাপনা

ছবির উৎস, Reuters

ট্রাম্পকে পরিদর্শনের আমন্ত্রণ গভর্নরের

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্যালিফোর্নিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি দাবানলের ঘটনা রাজনীতিকরণ না করার জন্য মি. ট্রাম্পের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দেয়া চিঠিতে ঘটনাস্থলে এলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখতে তাদের সঙ্গে যোগ দেয়ার জন্য মি. ট্রাম্পের প্রতি অনুরোধ করেন।

“আমাদের অবশ্যই কোন মানবিক বিপর্যয়কে রাজনীতিকরন করা উচিত নয়। কিংবা ভুল তথ্য ছড়ানোও উচিত না,” নিউসন লিখেছেন।

ওই চিঠিতে তিনি বলেন- হাজার হাজার আমেরিকান তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতির দ্রুত উত্তরণ ও পুনর্গঠনে ‘আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টাই তারা ডিজার্ভ করে’।

এখন পর্যন্ত কমপক্ষে দশ হাজার ঘরবাড়ি ও অন্য স্থাপনা দাবানলে ধ্বংস হয়ে গেছে।

রাত্রিকালীন কারফিউ দেয়া হয়েছে আক্রান্ত এলাকায়

ছবির উৎস, Getty Images

১১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত

লস এঞ্জেলস কর্তৃপক্ষ দাবানলের ঘটনায় এখন পর্যন্ত এগার জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

এর মধ্যে পাঁচজন পালিসেইডস এলাকায় আর বাকী ছয় জন ইটনের আগুনের মারা গেছে।

আলটাডেনা, মালিবু, প্যাসিফিক পালিসেইডস ও টোপাঙ্গায় এসব মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটেছে।

এর মধ্যে মাত্র তিনটি ঘটনায় মৃতদেহের অংশবিশেষ পাওয়া গেছে। তবে তাদের কোন পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

ঘরে না ফেরার অনুরোধ

আলটাডেনা ও পাসাডেনা এলাকার অধিবাসীদের ঘরবাড়িতে এখনি না ফেরার বিষয়ে সতর্ক করেছেন সেখানকার সিনেটর সাশা রিনি পেরেজ।

“ঘরবাড়িতে ফেরার জন্য নিরাপদ সময় এটি নয়,” বিবিসির সাথে আলাপকালে বলছিলেন তিনি।

তিনি জানান, সেখানকার অধিবাসীরা এবারের মাত্রায় দাবানল আগে কখনো দেখেনি।

ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটি এলাকা

পানির স্বল্পতায় নির্বাপণ কর্মীরা

লস এঞ্জেলস ফায়ার ডিপার্টমেন্টের একজন ক্যাপ্টেন অ্যাডাম ভ্যান গার্পেন বলেছেন দমকল বাহিনীর কিছু কর্মীর কাছে পর্যাপ্ত পানি নেই।

“আমি এটা দেখেছি। এমন পরিস্থিতিতে আমরা যা করি তা হলো অন্য জায়গা থেকে পানি এনে ট্যাংকে রাখি। তবে অবশ্যই এটা অগ্নিপ্রতিরোধ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে,” বলেছেন তিনি।

তিনি বলেন, দমকল কর্মী হিসেবে তারা আশা করেন যে ফায়ার হাইড্রেন্টসগুলো ঠিক মতো কাজ করবে এবং তাতে পানির যথাযথ চাপ থাকবে।

দাবানলে হাজার হাজার স্থাপনা পুড়েছে

ছবির উৎস, Reuters

অভিনেত্রীর বন্ধুর মৃত্যু

অভিনেত্রী জেনিফার গার্নার এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে দাবানলের ঘটনায় তিনি তার এক বন্ধুকে হারিয়েছেন।

“আমি আমার এক বন্ধুকে হারিয়েছি। তিনি সেখান থেকে সময়মত বেরিয়ে আসতে পারেননি,” এমএসএনবিসি-কে বলেছেন তিনি।

গার্নার পঁচিশ ধরে পালিসেইডস এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন বলে জানিয়েছেন। সেখানে একটি চার্চসহ বহু ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে।

“নিজেকেই দোষী মনে হয়। আমি কী করতে পারি? কিভাবে সহায়তা করতে পারি?” বলছিলেন তিনি।

ফায়ার হাইড্রেন্টগুলোতে পানির স্বল্পতা তৈরি হয়েছে

ছবির উৎস, Lucy Sherriff/BBC

প্রিন্স হ্যারি ও মেগান ত্রাণ শিবিরে

দ্যা ডিউজ এবং ডাচেস অব সাসেক্স পাসাডেনা এলাকায় একটি রিলিফ সেন্টার পরিদর্শন করেছেন।

স্থানীয় মিডিয়ায় প্রচার হওয়া ফুটেজে দেখা যাচ্ছে হ্যারি ও মেগান মেয়র ভিক্টর গর্ডনের সাথে কথা বলছেন। তারা যেখানে কথা বলেছেন সেখানে বিতরণ করার জন্য খাবার তৈরি হচ্ছিলো।

এই দম্পতি চার বছর আগে ক্যালিফোর্নিয়ার মন্টেসিটো বসবাস শুরু করেছিলাম। সেখান থেকে প্যাসিফিক পালিসেইডস মাত্র দেড় ঘণ্টার ড্রাইভিং দূরত্বে। ওই এলাকাটিই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হওয়া এলাকাগুলোর একটি।