Source : BBC NEWS

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের প্রবণতা বেশ বেড়েছে-প্রতীকী ছবি।

ছবির উৎস, Getty Images

ভারতের সরকার এক প্রস্তাবিত আইনে বলেছে ১৮ বছরের নিচে কাউকে সামাজিক মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে গেলে তার অভিভাবকের অনুমতি লাগবে। কেন্দ্রের ডিজিটাল পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন আইন ২০২৩-এর খসড়ায় এই প্রস্তাব আনা হয়েছে।

সম্প্রতি ১৬-র নীচে থাকা নাগরিকদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে অস্ট্রেলিয়া। উদ্দেশ্য ভার্চুয়াল দুনিয়ার কুপ্রভাব থেকে তাদের সুরক্ষা।

বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এই একই নিয়ম কার্যকর করা সম্ভব কি না সে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। আবার প্রশ্ন উঠেছে, এই নিয়ম বাস্তবে কতটা কার্যকর করা সম্ভব।

এই আলোচনার মাঝেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাবালকদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এক বিশেষ পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগী ভারতের ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। তবে অস্ট্রেলিয়ার মতো সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা নয়, প্রস্তাবিত আইনে উল্লেখ করা হয়েছে অপ্রাপ্তবয়স্কদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হলে বাবা-মা অথবা তাদের অবর্তমানে অন্য কোনও প্রাপ্তবয়স্ক অভিভাবকের অনুমতি দরকার এবং তা যাচাইও করতে হবে।

কেন্দ্র সরকারের তরফে ওই খসড়া প্রকাশ করে নাগরিকদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে।

এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন বহু অভিভাবকই। তারা মনে করেন, সাইবার বুলিয়িং এবং তার ফলে ডিপ্রেশন ও আত্মহত্যার ঘটনা বা নাবালকদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতার হার বৃদ্ধির মতো বিষয় এড়াতে এই ‘কড়া নজরদারি’ গুরুত্বপূর্ণ।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ইন্টারনেট মাধ্যমে শিশুদের নিশানা করছে প্রতারকরা বা নাবালকদের ব্যক্তিগত তথ্য অপব্যবহার করা হচ্ছে। এই আইনের মাধ্যমে সেই সমস্ত ঘটনাতেও রাশ টানা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন অনেকে।

তবে এই প্রস্তাব নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলে। তাদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন বাস্তবে এই আইন কতটা কার্যকর করা সম্ভব।

আরও পড়তে পারেন

খসড়ায় যা উল্লেখ করা হয়েছে

ডিজিটাল পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন আইন, ২০২৩-এর খসড়ায় অপ্রাপ্তবয়স্কদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাবালকদের উপর কড়া নজরদারির বিষয়েও।

খসড়ার প্রস্তাব অনুযায়ী, অভিভাবকের অনুমতিসাপেক্ষে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবে অনূর্ধ্ব ১৮ নাগরিকেরা। অভিভাবকদের অনুমতির বিষয়ে নিশ্চিত হতে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

অ্যাকাউন্ট তৈরির সময় সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নাবালক নিজেই জানাবে সে অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং তার অভিভাবক কে। এরপর ওই সংস্থাকে তার অভিভাবককের কাছ থেকে নিশ্চিত হতে হবে সেই তথ্য সঠিক কি না। অভিভাবকের বয়স, নাবালকের সঙ্গে তার সম্পর্ক, এবং নাবালকের বয়সের বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। তথ্য খতিয়ে দেখতে সরকারের তরফে জারি করা পরিচয়পত্র অথবা ডিজিটাল পরিচয়পত্র যাচাই করতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে।

অথবা অভিভাবকের যদি ওই পেজে কোনও অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে তাহলে তিনি তা জানাবেন সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে। নিজের ও নাবালকের বয়স সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যও জানাবেন সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে।

মোটের উপর সমস্ত তথ্য যাচাই হলে তবেই অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবে ওই নাবালক।

ভার্চুয়াল দুনিয়ায় নাবালকদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই নজরদারির প্রস্তাব।

ছবির উৎস, Getty Images

কেন সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা নয়?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়াকড়ি করলেও অস্ট্রেলিয়ার মতো সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটেনি কেন্দ্র সরকার।

এই প্রসঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি সচিব এস কৃষ্ণন ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কেন্দ্র সরকারের এমন চিন্তার নেপথ্যে বিশেষ কারণ রয়েছে।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এই জাতীয় বিষয়গুলোতে প্রত্যেক সমাজকে তাদের নিজের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাক্সেস সম্পূর্ণরূপে সীমাবদ্ধ করবেন কি না সেটাও একটা সামাজিক বিষয়।”

“ভারতে অনলাইনে অনেক কিছুই শেখানো হয়। সুতরাং, আপনি যদি সম্পূর্ণ অ্যাক্সেস ব্লক করে দেন তাহলে তা একটা ভাল উপায় কি না সেটাও কিন্তু একটা বৃহত্তর সামাজিক বিতর্কের বিষয়।”

“আমরা কেবল এই বিষয়টার প্রযুক্তিগত দিকটা নিয়ন্ত্রণ করি। কিন্তু কার অ্যাক্সেস থাকবে এবং কীভাবে থাকবে সেই বিষয়ে বৃহত্তর সমাজকে ঐকমত্য থাকতে হবে। সেই মতো সরকারকে বিষয়টা গ্রহণ করতে হবে এবং এগিয়ে যেতে হবে।”

কোভিডের সময় থেকেই অনলাইন শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে-প্রতীকী ছবি।

ছবির উৎস, Getty Images

‘সামাজিক বিষয়’

উত্তর ২৪ পরগণার একটা সরকারী স্কুলের শিক্ষিকা সুদেষ্ণা সেন বলেন, “সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার বদলে সিদ্ধান্তের একটা অংশ অভিবাবকদের বা বৃহত্তর সমাজের উপর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টা বেশ ইতিবাচক বলে আমি মনে করি। কারণ এখানে অভিভাবকেরা জড়িয়ে রয়েছেন।”

“কোথাও না কোথাও বাবা-মায়েরাও দায়বদ্ধ থাকবেন এবং নজরদারি রাখতে পারবেন কারণ তাদের মাধ্যম দিয়েই প্রাথমিকভাবে অ্যাকাউন্ট তৈরি হবে।”

প্যারেন্টিং কনসালটেন্ট পায়েল ঘোষও এই প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন। তার কথায়, “আমাদের দেশের বাচ্চারা ইন্সট্রাক্টিভ পেরেন্টিং-এ (অভিভাবকদের নির্দেশ অনুযায়ী চলা) অভ্যস্ত। আমি মনে করি এই উদ্যোগ বেশ ইতিবাচক। অভিভাবক এবং সন্তান যৌথভাবে এই নিয়ম কার্যকর করতে পারবে। হ্যাঁ, প্রাথমিক ভাবে বাস্তবায়ন করতে গেলে সমস্যা হয়তো হবে কিন্তু আমার মনে হয় দীর্ঘমেয়াদে ভালই হবে।”

তিনি জানিয়েছেন, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কুপ্রভাব ব্যাপকভাবে দেখা গিয়েছে। “১২ বছরের পর থেকেই ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এর ক্ষতিকারক প্রভাব ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। সকাল থেকে যে চারজন শিশু আমার কাছে এসেছে তাদের মধ্যে তিনজনের সমস্যাই এটা।”

“এদের মধ্যে একজন কাল গোটারাত অনলাইনে গেম খেলেছে। সে লেখাপড়া ছেড়েই দিয়েছে, অন্যজনের একাগ্রতা তলানিতে।”

এছাড়াও তার অভিজ্ঞতায় সাইবার বুলিয়িং, তার ফলে ডিপ্রেশন এবং অন্যান্য সমস্যায় ভোগা নাবালকদের সংখ্যাও চোখে পড়ার মতো।

অনলাইন গেম খেলার নেশা রয়েছে বহু কিশোর-কিশোরীর- প্রতীকী ছবি।

ছবির উৎস, Getty Images

অবিভাবকরা কী বলছেন

কেন্দ্র সরকারের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন অভিভাবকরা।

কলকাতার এক বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত শর্মিষ্ঠা সেনগুপ্তর ছেলে অত্রি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। তার কথায়, “আজকাল পড়াশোনার জন্য বাচ্চাদের হাতে মোবাইল দিতে হয়। কিন্তু পড়াশোনার বাইরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে রাশ টানা প্রয়োজন। যে পরিমাণে সাইবার বুলিয়িং, ডিজিটাল ফ্রড,-এর ঘটনা বাড়ছে, তাতে সত্যিই ভয় হয়। বাচ্চাদের মধ্যে ডিপ্রেশন এবং আত্মহত্যার প্রবণতাও বাড়ছে। একটা কড়া নিয়ম থাকলে সেটা সুরক্ষা কবচের মতো কাজ করবে বলে আমার বিশ্বাস।”

দিল্লির বাসিন্দা মৌসুমী বিশ্বাসও একই মত পোষণ করেন। তার মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘক্ষণ সময় কাটায়।

মৌসুমী বিশ্বাস বলেছেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিলস এবং শর্ট ভিডিওর প্রতি অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েরা ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট, এছাড়া গেম তো আছেই।”

“এতে শিশুমন যেমন প্রভাবিত হয়, তেমনই একাগ্রতা নষ্ট হয় এবং লেখাপড়াতেও প্রভাব পড়ে। আমি মনে করি সরকার বিধি নিষেধ আরোপ করলে ভালই হবে।”

প্রস্তাবিত আইন কার্যকর করতে হলে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা-প্রতীকী ছবি।

ছবির উৎস, Getty Images

কোথায় সমস্যা?

এই প্রস্তাবিত আইন বাস্তবায়নের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ এবং আইনজীবী বিভাস চ্যাটার্জী বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক রাজ্যে এমন আইন রয়েছে। সেখানে অভিভাবকেরা তার সন্তানদের অনলাইনে গতিবিধির উপর নজর রাখতে পারেন। ভারতে সেটাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অন্য আঙ্গিকে এসেছে। এটার ভাল-মন্দ দুই দিকই রয়েছে।”

“কোভিডের সময় থেকে শিশুদের অনলাইনে পড়াশোনার প্রবণতা বেড়েছে। পড়া শেষ করার পর অনেক অভিভাবকেরাই লক্ষ্য করেন না সন্তানরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কী করছে।”

“বাচ্চারা সেখানে নানান রকমের গেম খেলে, তাদের হাতে বিভিন্ন কন্টেন্ট এসে পড়ে যার মধ্যে অনেককিছুই ক্ষতিকারক। একদিকে যেমন বাচ্চাদের মধ্যে মোবাইলের প্রতি নেশা বাড়ছে তেমনই অপরাধও। এতে রাশ টানতে হলে কড়া নজরদারি দরকার এবং সেদিক থেকে এই আইনের গুরুত্ব রয়েছে।”

কিন্তু বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যাও রয়েছে। মি. চ্যাটার্জীর মতে, “প্রথম প্রশ্ন হলো কতটা সম্ভব এবং কীভাবে। দ্বিতীয়ত, আইন করে এই নেশা কমানো যায় কি না সে। তৃতীয়ত অনেক অভিভাবকই প্রযুক্তির বিষয়ে সড়গড় নন। কিছু টেকস্যাভি অভিভাবকের জন্য এই আইন সুবিধাজনক হলেও গ্রামের অনেক বাবা-মা ভার্চুয়াল দুনিয়া সম্পর্কে জানেন না। তারা কী করবেন?”

বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অধ্যাপক এবং সমাজকর্মী শাশ্বতী ঘোষ। তার কথায়, “কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের ডেকে পাঠানো হলে তারা যাকে এনেছেন তিনি সত্যিই তার বাবা-মা কিম্বা দাদা কি না নিশ্চিত করতে আমরা হিমশিম খাই। এই পুরো বিষয়টা ভার্চুয়ালি কীভাবে সম্ভব হবে সেটা দেখার।”

ভারতের একটি নামকরা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত সৌম্যক সেনগুপ্ত। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। তার কথায়, “প্রথমেই সমস্ত বিষয়টাকে পাশ কাটিয়ে দেওয়া যায় যদি কোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট তৈরির সময় তার প্রকৃত বয়স না জানায়।”

“দ্বিতীয়ত অনেক কিশোর-কিশোরীই বাবা-মায়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আর সেক্ষেত্রে পরবর্তী ধাপে যাওয়ার প্রয়োজনই পড়বে না। তৃতীয়ত, যে অভিভাবক জানেন না ইন্সটাগ্রাম কী এবং কেন ব্যবহার না করলেও চলে তাদের সুযোগ নিতে পারে যে কেউ।”

“চতুর্থত, সামাজিক মাধ্যমে একটা অ্যাকাউণ্ট তৈরির জন্য এত ঝক্কি অভিভাবকদের ক’জন সামলাবেন। পঞ্চমত, ইতিমধ্যে বিদ্যমান বিপুল সংখ্যক অপ্রাপ্তবয়স্কদের অ্যাকাউন্টের কী হবে বা তার ভেরিফিকেশনই বা কীভাবে হবে।”

অন্য একটা সমস্যার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।

তার কথায়, “বহু ক্ষেত্রে স্ক্যামাররা ফিশিং লিঙ্ক ব্যবহার করে ফেক ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রামের আকাউন্ট তৈরির পেজ ক্রিয়েট করে। দেখতে হুবহু আসল পেজের মতো। অ্যাকাউন্ট তৈরির সময় কেউ ভুল করে নিজেদের তথ্য সেখানে দিলে জালিয়াতদের হাতে সমস্ত তথ্য চলে যাবে। সেক্ষেত্রে অন্য বিপদ হবে।”

অন্যদিকে, এমনটাও দেখা গিয়েছে যে অল্পবয়সী ছেলে মেয়েরা অন-লাইনে বুলিয়িং, প্রতারণা, হুমকি বা হোক্স কলের মতো অপরাধপ্রবণ কাজকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। সেক্ষেত্রে এই নজরদারি কাজে লাগতে পারে বলে মনে করেন ওই তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।

অভিভাবকদের নিজেদেরও আরও সচেতন হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

ছবির উৎস, Getty Images

বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর

‘নিজেদের সচেতনতা’

প্রস্তাবিত আইন ব্যতিরেকে বিশেষজ্ঞদের প্রত্যেকেই কিন্তু অভিভাবকদের সচেতনতার উপর জোর দিয়েছেন। শ্বাশ্বতী ঘোষ বলেছেন, “সবার আগে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদের নিজেদের নেশা কমাতে হবে। বাচ্চাদের মোবাইলে গেম খেলার বদলে তাদের বাইরে খেলাধুলার উপর জোর দিতে হবে, তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তবেই কিছু করা সম্ভব।”

পেরেন্টিং কনসাল্টেন্ট পায়েল ঘোষ মনে করেন প্রস্তাবিত আইন কার্যকর করতে স্কুল এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

তার কথায়, “প্রথম দিকে আইন কার্যকর করতে গেলে সমস্যা হবে। যারা প্রযুক্তিগত বিষয় বোঝেন না তারা আস্তে আস্তে বুঝতে পারবেন তার জন্য প্রচার করতে হবে। অভিভাবকদের সচেতন করে তুলতে হবে।”

“স্কুল, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, গ্রাম পর্যায়ে পঞ্চায়েত সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। হয়তো একবছর সময় লাগবে কিন্তু ইতিবাচক ফলাফল হবে বলে আমি মনে করি।”