Source : BBC NEWS

ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে সম্প্রতি একাধিক যৌন অপরাধের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে যেখানে অভিযুক্ত নাবালক- প্রতীকী ছবি।

ছবির উৎস, Getty Images

ভারতের উত্তর প্রদেশে ১২ বছরের একজন ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে অপ্রাপ্ত বয়স্ক পাঁচজন ছাত্রের বিরুদ্ধে।

উত্তর প্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে এই ঘটনায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক যে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা সপ্তম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্র, বয়স ১২ থেকে ১৫-র মধ্যে।

ঘটনার ভিডিও করে তা ভাইরাল করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগও করা হয়।

উত্তর প্রদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর মনীশ সাক্সেনা সাংবাদিকদের বলেছেন, “ওই ছাত্রী দলিত সম্প্রদায়ের। তার মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়েছে।”

“পাঁচজন অভিযুক্তই নাবালক। তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তারাও দলিত সম্প্রদায়ের এবং প্রত্যেকেই হেনস্থার শিকার ছাত্রীর বাড়ির কাছেই থাকে। তাদের জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের কাছে পেশ করা হবে।”

ঘটনাটা আটই মে ঘটলেও তা প্রকাশ্যে আসে দিন কয়েক আগে, যখন ছাত্রীর মাকে তারই এক প্রতিবেশী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ঘটনার ভিডিও দেখান। এরপর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রীর পরিবার।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ঘটনার দিন ওই ছাত্রী বাড়ির কাছের মাঠে খেলছিল। তাকে মাদক মিশ্রিত কোল্ড ড্রিঙ্ক খাওয়ানোর পর কাছের এক স্কুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।

প্রাথমিক তদন্ত করে পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্তদের মধ্যে একজনের পরিবারের সদস্য ওই স্কুলে কর্মরত। সেই কর্মীর কাছ থেকে কোনোভাবে চাবি সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে,অভিযুক্তরা ঘটনার ভিডিও করে এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয় ওই ছাত্রীকে।

প্রসঙ্গত, এমন ঘটনা নতুন নয়, গত কয়েক মাসে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এমন অনেক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে অল্পবয়সীদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধের অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়তে পারেন
উত্তর প্রদেশের এক নাবালিকাকে তিনজন ছাত্র ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ- প্রতীকী ছবি।

ছবির উৎস, Getty Images

সাম্প্রতিক আরও কয়েকটা ঘটনা

চলতি মাসেই উত্তর প্রদেশেরই সুলতানপুরে ১৪ বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ, ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে তিনজন। আভিযুক্তদের মধ্যে একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে রয়েছে।

জাতীয় মহিলা কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই মামলায় রিপোর্ট তলব করেছে। কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া রাহাতকার উত্তর প্রদেশের ডিজিপি’র কাছ থেকে পুরো ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছেন।

কর্ণাটকের বেলাগাভিতে ১৪ বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তিনজনের বিরুদ্ধে যার মধ্যে দু’জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক। লাগাভির পুলিশ কমিশনার ইয়াদা মার্টিন মারবনইয়াং সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তও অপ্রাপ্ত বয়স্ক।

চলতি মাসে চেন্নাইয়ে ১৩ বছরের কন্যাকে নিয়ে কাছের হাসপাতালে গিয়েছিলেন তার মা। মেয়েটির পেটে যন্ত্রণা হচ্ছিল। চিকিৎসক পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন ওই নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। হাসপাতাল থেকে পাল্লাভরম থানায় যোগাযোগ করা হয়।

পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় ১২জনের নাম উঠে আসে যাদের মধ্যে ছয়জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে।

শিশু অধিকার কর্মী প্রশান্ত কুমার দুবে বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “অল্পবয়সীদের মধ্যে যৌন অপরাধের প্রবণতা কিন্তু চিন্তা বাড়াচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে নাবালকদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের মধ্যে একটা বড় অংশ হলো যৌন অপরাধ। এর মধ্যে যৌন হেনস্থা এমনকি ধর্ষণও রয়েছে।”

“সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো একাধিক ঘটনায় অভিযুক্তদের বয়স ১২ থেকে ১৪ বা তারও নিচে। এই বিষয়টা নিয়ে কিন্তু আমাদের ভাবতেই হবে।”

নাবালকদের মধ্যে অপরাধের ধরন বিশেষজ্ঞদের চিন্তা বাড়াচ্ছে- প্রতীকী ছবি।

ছবির উৎস, Getty Images

অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে অপরাধের প্রবণতা বাড়ছে

ন্যাশানাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সালে ৫,৩৫২টা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে অভিযুক্তরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক।

এনসিআরবি-র তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে নথিভুক্ত হওয়া মামলার মধ্যে যৌন হয়রানি-সহ আইপিসি-র সেকশন ৩৫৪ ধারায় নথিভুক্ত মামলার সংখ্যা ৮৭৪টা এবং ধর্ষণের মামলা ১১৩০টা।

নাবালকদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে তাতে ৭৯ দশমিক তিন শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছর।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত হওয়া মোট মামলার সংখ্যা ছিল ৫,৮২৮টা।

এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেছেন, “এনসিআরবি-র সর্বশেষ তথ্য ২০২২ সালের। আমার ধারণা, সাম্প্রতিক সময়ের তথ্য প্রকাশ পেলে ওই সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।”

“তাছাড়া রিপোর্টে উল্লেখ করা মোট মামলার সংখ্যা দেখে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে অপরাধের প্রবণতা কমেছে এমন ভাবার কারণ নেই। ওই সামান্য সংখ্যার তারতম্য নিয়ে আশাবাদী হওয়ার কোনও কারণ রয়েছে বলে আমি মনে করি না। আর যে সংখ্যক ঘটনা ঘটে, তার চেয়ে অনেক কম মামলা দায়ের হয়।”

যে কারণে উদ্বেগ বাড়ছে

তিনি জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে অল্পবয়সীদের মধ্যে যৌন অপরাধের প্রবণতা সবচেয়ে উদ্বেগের কারণ।

জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের ওই সদস্য বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “একদিকে যেমন যৌন হেনস্থার ঘটনায় ১২ থেকে ১৪ বছরের অভিযুক্তরা চিন্তা বাড়াচ্ছে তেমনই, অপরাধের ধরনও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের অপরাধের মধ্যে গণধর্ষণ যেমন রয়েছে তেমনই ঘটনার সময় হেনস্থার শিকারদের তীব্র আঘাত, পুরো ঘটনা মোবাইলে ভিডিও করে তা প্রকাশ করার হুমকি, এমন কি খুনের অভিযোগ রয়েছে। নিগ্রহের শিকারদের মধ্যে নাবালক ও নাবালিকা দুই-ই রয়েছে, যদিও মেয়েদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি বলে জানিয়েছেন তিনি।

মধ্য প্রদেশের শিশু অধিকার কর্মী প্রশান্ত কুমার দুবে ‘প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সচুয়াল অফেন্সেস অ্যাক্ট’-এর অন্তর্গত একাধিক মামলা কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং ভুক্তভুগীদের জন্য কাজ করেছেন।

তিনি বলেন, “এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যেখানে অপরাধের ধরন দেখলে শিউরে উঠতে হয়। ভাবতে অবাক লাগে এত অল্প বয়সে তারা এমন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। এমন ঘটনাও রয়েছে যেখানে একজন নাবালক প্রথমে নিজে মেয়েটিকে নিগ্রহ করেছে এবং পরে তার বন্ধুদের গিয়ে একই কাজ করতে বলেছে।”

“অন্যদিকে, নিগ্রহের শিকারদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। ঘটনার পর থানায় মামলা দায়ের করা থেকে শুরু করে, শারীরিক পরীক্ষা করানো, তার জন্য হাসপাতালে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করা, মামলার তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট আইন মেনে তার বিচারের সময় মিলিয়ে পর্যন্ত নির্যাতনের শিকারদের একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, যেটা ভীষণ কষ্টদায়ক।”

ইন্টারনেটে থাকা বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট শিশুমনে প্রভাব ফেলে বলে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন-প্রতীকী ছবি।

ছবির উৎস, Getty Images

কেন এই অপরাধের প্রবণতা বাড়ছে?

অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে এই জাতীয় অপরাধের প্রবণতার কারণ হিসাবে একাধিক বিষয় উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

মি. দুবে বলেছেন, “অবাধ ইন্টারনেট অ্যাক্সেস, সেখানে যৌনতায় পরিপূর্ণ কন্টেন্ট, যা তাদের বয়সের জন্য উপযোগী নয়, ওই কন্টেন্ট নিয়ে কী করবে তা বুঝতে না পারা, অল্প বয়সে মাদক-সহ বিভিন্ন ধরনের আসক্তি- এমন একাধিক বিষয় জড়িত রয়েছে।”

“কোভিডের সময় থেকে এই সমস্যা বেড়েছে কারণ অন-লাইন ক্লাসের জন্য বাচ্চাদের হাতে ইন্টারনেট কানেকশন -সহ মোবাইল বা কম্পিউটার দিতে হয়েছে। কিন্তু তার এই অপব্যবহার নতুনভাবে সমস্যার জন্ম দিয়েছে।”

তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, অনেক অভিভাবকই মোবাইল, কম্পিউটার বা টিভিতে ‘প্যারেন্টাল লক’ (যাতে বাচ্চারা তাদের জন্য অনুপযোগী কন্টেন্ট না দেখতে পারে)-এর বিষয়ে জানেন না।

অনেকক্ষেত্রে বাবা-মা দু’জনেই কর্মরত। তাদের পক্ষে ছেলে-মেয়েদের ২৪ ঘণ্টা নজরে রাখা সম্ভব নয়। গ্রামাঞ্চলে অনেক অভিভাবকই প্রযুক্তির দিক থেকে সড়গড় নন।

অনেক সময় দাদু-দিদিমার কাছে বাচ্চারা থাকে, যারা প্রযুক্তির বিষয়ে সমস্ত কিছু না-ও জানতে পারেন।

“সমস্যা হলো, ইন্টারনেটে থাকা ভিডিওতে যা দেখছে, বাস্তবেও সেটা প্রয়োগ করতে চায় এবং সহপাঠী বা অন্য মেয়েদের নিশানা করে,” বলেছেন মি. দুবে।

এই প্রসঙ্গে তিনি চিন্তাধারা বদলের প্রসঙ্গও এনেছেন।

তার কথায়, “আরও একটা সমস্যা হলো আমাদের সমাজে মেয়েদের নিয়ে যে প্রচলিত চিন্তা ভাবনা যা এই ধারনাকে উস্কে দেয় যে মেয়েদের নিয়ে যা কিছু করা যায়। তাই প্রতিবেশী মেয়ে, সহপাঠী বা অন্যান্যদের নিশানা হতে হয়। এই চিন্তা বদলাতে হবে।”

সমাজকর্মী ও অধ্যাপিকা শাশ্বতী ঘোষও এই বিষয়ে তার মতামত জানিয়েছেন।

তার কথায়, “মেয়েরা ভোগ্যস্তুর মতো, তাদের দমিয়ে রাখা যায়-এই জাতীয় চিন্তা কিন্তু একটা বড় কারণ বলে আমি মনে করি। আমরা মেয়েদের আত্মরক্ষা শেখার কথা বলি কিন্তু বাড়ির ছেলেদের শেখাই না যে তোমরা মেয়েদের এইভাবে দেখো না।”

“এই চিন্তা যদি আমরা এখনও না বদলাই তাহলে কবে বদলাব?”

সন্তানরা ইন্টারনেটে কী দেখছে সে বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা- প্রতীকী ছবি।

ছবির উৎস, Getty Images

বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর

কী উপায়

বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরাধের গভীরে যে কারণ রয়েছে, সেই বিষয়ে ভাবতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ সত্যগোপাল দে বলেছেন, “আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সমস্যার কারণ হলো আমরা মাথাব্যথার জন্য ওষুধ দিচ্ছি কিন্তু তার কারণ খুঁজে বের করছি না।”

“বয়ঃসন্ধিকালে বয়সোপযোগী যে সমস্ত বিষয় নিয়ে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিৎ আমরা তা এড়িয়ে চলি। যেহেতু একেবারে শিশুবয়স থেকেই ছেলে-মেয়ে দু’জনকেই নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাই তাদের কিছু কথা জানিয়ে রাখা দরকার। অবশ্যই তাদের বয়সের কথা মাথায় রেখে।”

“বয়ঃসন্ধিকালে কোনও মেয়ে তার পিরিয়ডকে কেন্দ্র করে মায়ের সঙ্গে যতটুকু সুযোগ পায় কথা বলার, অধিকাংশ সময় একজন ছেলে সে সুযোগ পায় না বাবা-মায়ের কাছে। তারা তাদের কৌতূহলের নিবৃত্তি করে বন্ধুদের কাছ থেকে জেনে এবং ইন্টারনেটের সাহায্যে। আর এটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।”

“আমরা যদি তাদের যদি তাদের সঙ্গে বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো কথা বলি এবং বোঝাই মেয়েরা ভোগ্য নয়, তারাও মানুষ, তাহলে আমার মনে হয় পরিবর্তন আসবে।”

এই প্রসঙ্গে বাবা-মায়ের ভূমিকার উপর জোর দিয়েছেন প্যারেন্টিং কনসালটেন্ট পায়েল ঘোষ। তিনি বলেছেন, “নতুন প্রজন্ম একাকীত্বে ভোগে। তাদের সমস্যা এবং অভিব্যক্তির বিষয়ে শোনার মতো মানুষ কম। অভিভাবকদের জাজমেন্টাল না হয়ে সন্তানের সমস্যার কথা শোনা এবং গঠনমূলক আলোচনা করা দরকার।”

“দৈনন্দিন জীবনে তাদের ছোটখাটো ওঠাপড়া নিয়েও কথা বলা দরকার। কারণ অনেক সময় দেখা গেছে বাচ্চারা বুলিয়িং-এর শিকার হচ্ছে সেই সময় তারা কিছু করতে পারছে না, পরে সেই পুষে রাখা ক্ষোভ অন্যভাবে বেড়িয়ে আসছে। তারা যৌন অপরাধের মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে।”

তিনি জানিয়েছেন কোন কোন বিষয় নাবালকদের উপর প্রভাব ফেলছে তা-ও লক্ষ্য করা দরকার। “কী কী বিষয় তাদের ট্রিগার করছে সেটা জানা দরকার। সেটা অন-লাইন গেম হতে পারে যেখানে মারামারি বা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়াই খেলা বা অন্যান্য কনটেন্ট হতে পারে যা শিশুমনে প্রভাব ফেলে।”

“অনেক সময় বাচ্চারা বাড়িতে গার্হস্থ্য হিংসা দেখে বা তাদের অভিভাবকরা তাদের মারধর করেন। এই দুই ঘটনাই কিন্তু মনে প্রভাব ফেলে এবং বিপরীত লিঙ্গের প্রতি একটা ক্ষোভের বা বিকৃত চিন্তার জন্ম করতে পারে।”

ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও অভিভাবকের ভূমিকার কথা বলেছেন এই বিশেষজ্ঞ। তার কথায়, “মা-বাবার নজরে রাখা উচিৎ তার সন্তান ইন্টারনেটে কী দেখছে। না বকাবকি করে তাদের বুঝিয়ে বলা দরকার কেন তা তাদের দেখা উচিৎ নয়।”

“যদি অভিভাবক প্রযুক্তির বিষয়ে না জানেন, তাহলে তাদের এমন কারও সাহায্য নেওয়া দরকার যিনি সেই বিষয়ে পারদর্শী। সেটা তার সন্তানের শিক্ষক-শিক্ষিকা হতে পারেন বা পাড়ার কেউ যিনি সে বিষয়ে জানেন। মোবাইল হাতে দিয়ে দিলেই হবে না, অভিভাবককেই দায়িত্ব নিতে হবে যাতে তার সন্তান এমন কিছুর সামনাসামনি না হয়ে পড়ে যা তার জন্য ক্ষতিকারক।”