Source : BBC NEWS

ছবির উৎস, EPA
২৫ মিনিট আগে
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আহ্বান সত্ত্বেও দেশটিতে চলমান যুদ্ধ নিয়ে বৃহস্পতিবার ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিতব্য শান্তি আলোচনায় থাকছেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রেমলিনের তরফ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্টের সহকারী ভ্লাদিমির মেডিনস্কি এই শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বলে ক্রেমলিনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এর আগে জেলেনস্কি বলেছিলেন, পুতিন রাজি হলে তিনি নিজে আলোচনায় অংশ নিয়ে তার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করবেন।
ব্যক্তিগতভাবে এই সাক্ষাৎ নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
গণমাধ্যমগুলো বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও আলোচনায় থাকবেন না। যদিও এর আগে পুতিন যোগ দিলে উপস্থিত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন জেলেনস্কি।
পুতিন উপস্থিত থাকার শর্তে ইস্তানবুলে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় অংশ নেয়ার কথা বলেছিলেন তিনি।
“রাশিয়া থেকে কে আসছেন আমি তা দেখার অপেক্ষায় আছি। তারপর ইউক্রেনের পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। এখন পর্যন্ত তাদের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে আসা বার্তা সন্তোষজনক নয়,” বুধবার রাতে ভিডিও ভাষণে জেলেনস্কি এসব কথা বলেন।
পুতিন এবং জেলেনস্কির মধ্যে সবশেষ সরাসরি সাক্ষাৎ হয়েছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে। আর ২০২২ সালের মার্চে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর কিছুদিন পর ইস্তানবুলে শেষবার সরাসরি আলোচনায় বসেছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন।
তখন থেকেই ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে। গত এক বছরে রাশিয়ান বাহিনী ধীরে ধীরে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে, বিশেষ করে দেশটির পূর্বাঞ্চলে তাদের নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে।
কোনো ধরনের পূর্বশর্ত ছাড়াই রোববার তুরস্কের বৃহত্তম শহরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানান পুতিন। এরপরই জেলেনস্কি জানান, তিনি নিজে সেখানে যাবেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টেও সেখানে যাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।
শনিবার কিয়েভে ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকের পর ইউক্রেনে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায় পশ্চিমা দেশগুলো। তারপরই পুতিন এই প্রস্তাব দেয়।
রোববার ট্রাম্প ইউক্রেনকে প্রস্তাব গ্রহণের আহ্বান জানানোর পর জেলেনস্কি নিজে সেখানে যাবার কথা জানান।
“হত্যা চালিয়ে যাওয়ার কোনো মানে নেই। বৃহস্পতিবার আমি তুরস্কে পুতিনের জন্য অপেক্ষা করব। ব্যক্তিগতভাবে,” সামাজিক মাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে লেখেন জেলেনস্কি।
এর আগে বুধবার ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, পুতিন গেলে তিনিও সেখানে যেতে পারেন।
বর্তমানে কাতারে অবস্থানরত মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, তিনি না গেলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আসবেন কি না সে বিষয়ে তার সন্দেহ আছে।
“আমি জানি তিনি (পুতিন) চান আমি সেখানে যাই আর সেটার সম্ভাবনা আছে। আমরা যদি যুদ্ধ বন্ধ করতে পারি, আমি অবশ্যই এ বিষয়ে ভাববো,” বলেন ট্রাম্প।
আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দেশটির শীর্ষ কূটনীতিক মার্কো রুবিও বুধবার তুরস্কে পৌঁছেছেন, সেখানে বৃহস্পতিবার তিনি ন্যাটো পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
সেই বৈঠকের আগেই বুধবার সন্ধ্যায় রুবিওর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা জানিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রিই সিবিহা। তিনি বলেন, তিনি মার্কিন শান্তি প্রচেষ্টার প্রতি ইউক্রেনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং রাশিয়াকে “ইউক্রেনের গঠনমূলক পদক্ষেপের প্রতিদান দেয়ার” আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার ইস্তাম্বুলে যাবার কথা রয়েছে রুবিওর। সেখানে তিনি ইউরোপীয় সহকর্মীদের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
বুধবার অ্যান্টালিয়ায় তার হোটেলে পৌঁছানোর পর, পুতিন তুরস্কে আসবেন কি না সে বিষয়ে বিবিসির পক্ষ থেকে করা প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি রুবিও।
হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা করছেন।
ফেব্রুয়ারিতে পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলে বছরের পর বছর ধরে চলা পশ্চিমা বয়কটেরও অবসান করেন তিনি।
ট্রাম্প এর আগে বলেছেন, রাশিয়া এবং ইউক্রেন “একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি” ছিল।
রোববার পুতিন সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দেয়ার পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন: “রাশিয়া ও ইউক্রেনের জন্য সম্ভাব্য চমৎকার একটি দিন!”