Source : BBC NEWS
ছবির উৎস, Getty Images
২ ঘন্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের প্রভিডেন্সে ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে বন্দুকধারীদের গুলিতে দুই জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন এবং আরও অন্তত নয় জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
তবে আহতদের অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল আছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার মেয়র ব্রেট স্মাইলি। তিনি অবশ্য সতর্ক করে বলেছেন যে, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
পুলিশ এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে এখনো ধরতে পারেনি। কালো পোশাক পরিহিত হামলাকারী একজন পুরুষ এবং তিনি ঘটনার পর পায়ে হেঁটেই পালিয়ে যান বলে পুলিশ বলছে।
ওদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুলির পর শিক্ষার্থীদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে, যেখানে তাদের সব ধরনের সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
“আমাদের কমিউনিটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার,” বিশ্ববিদ্যালয়টি বলেছে।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্দুকধারীর বিষয়ে প্রাথমিক সতর্কতা জারির পর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়ে গেলেও সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিষয়ে আর কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন যে, তারা শিগগিরই হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা একটি ভিডিও পেয়েছেন যেখানে সন্দেহভাজন হামলাকারী কালো পোশাক পড়ে আছেন এবং তার মুখ দেখা যাচ্ছে না।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এ ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।
ছবির উৎস, CBS/WPRI
দুই ঘণ্টা ডেস্কের নিচে ছিলাম
ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে কাজ করছিলেন এমন একজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তিনি একটি টেক্সট সতর্ক বার্তা পেয়েছিলেন যে তার কাছেই গুলি হচ্ছে।
“আরও তিনজন শিক্ষার্থী ছিলো আমার সাথে। আমরা দ্রুত লাইট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং আমাদের ডেস্কের নিচে লুকালাম,” স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন তিনি।
তিনি বলছিলেন, “আমি আশা করি কেউ গুরুতর আহত হয়নি। মনে হচ্ছিলো আমি ল্যাবেই নিরাপদ”।
ওই শিক্ষার্থী জানান যে, তারা প্রায় দুই ঘণ্টা ডেস্কের নিচেই অবস্থান করছিলেন। এরপর আর্মড পুলিশ এসে তাদের বাইরে নিয়ে যায়।
এদিকে নিহত দুইজন ছাত্র বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট জানানোর পর ধারণা করা হচ্ছে যে আহত অন্যরাও বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র।
দরজা বন্ধ রাখার নির্দেশনা
ব্রাউন ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ ঘটনার পর থেকেই তাদের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ কক্ষের দরজা বন্ধ রাখতে এবং ক্যাম্পাসে ঘুরাঘুরি না করার নির্দেশনা দিয়েছে।
হামলাকারীকে ধরার জন্য তল্লাশি অভিযান চালানোর জন্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
“আমরা জানি ব্যাপক ভীতি ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে আমাদের এই কমিউনিটিতে,” বলছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা এইচ প্যাক্সসন।
“আমরা লকডাউনের মধ্যেই আছি এবং আমাদের সব সদস্যদের নিজ নিজ জায়গায় নিরাপদ আশ্রয়ে থাকাকেই জরুরি মনে করছি,” বলেছেন তিনি।
ছবির উৎস, Getty Images
ইউনিভার্সিটি সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে
ব্রাউন ইউনিভার্সিটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম পুরনো ও মর্যাদাবান বিশ্ববিদ্যালয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের এলিট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গ্রুপ- আইভি লীগের অংশ।
এর শিক্ষার্থী সংখ্যা ১১ হাজার। শিক্ষার্থীদের এখানে ভর্তির জন্য তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
রোড আইল্যান্ডের রাজধানী শহর প্রভিডেন্সেই এর অবস্থান। এটি বোস্টন থেকে ৫০ মাইল আর নিউইয়র্ক থেক ১৮০ মাইল দূরে অবস্থিত।
এ সপ্তাহে ছুটির দিনেও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছিলো, কারণ তাদের ফাইনাল পরীক্ষা চলছিলো।
কর্মকর্তারা বলছেন, গুলির ঘটনা ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বারুস অ্যান্ড হলি ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনে। এটি ক্যাম্পাসের পূর্বাঞ্চলীয় প্রান্তে।
সাত তলা এই ভবনটিতে স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং ও পদার্থবিদ্যা বিভাগ রয়েছে, যার অংশ হিসেবে এখানে প্রায় ১০০ গবেষণাগার, কয়েক ডজন ক্লাসরুম ও তিনটি লেকচার হল আছে।
ছবির উৎস, CBS/WPRI
সন্ত্রাসী হামলা কি?
এই গোলাগুলির ঘটনার সাথে সন্ত্রাসের কোনো সম্পর্ক আছে কী-না এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় পুলিশ প্রধান বলেছেন তারা এখনো এ বিষয়ে জানেন না।
তিনি জানান যে, হামলাকারীদের বাইরের কেউ সহায়তা করেছে কী-না তদন্তকারীরা তা এখনো জানতে পারেনি।
তবে, তিনি জানিয়েছেন যে, ভবনের প্রথম তলার একটি শ্রেণী কক্ষেই গুলির ঘটনা ঘটেছে। হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি পুলিশ এখনো পায়নি।
সন্দেহভাজন হামলাকারীকে ধরার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। তবে হামলায় কোন ধরনের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে সেটিও এখনো জানা যায়নি।
ওদিকে, রোড আইল্যান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আহতদের চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করে একটি বিবৃতি দিয়েছে।
“হাসপাতালটি লকডাউন অবস্থায় আছে এবং এখন শুধু জরুরি বিভাগের রোগীদের নেওয়া হচ্ছে,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে।







